সম্প্রতি সাসপেন্ড হওয়া রাজ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তারকেশ্বর মণ্ডলের বিরুদ্ধে ওঠা একগুচ্ছ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামল শিক্ষা দফতর। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ উচ্চশিক্ষা দফতরের তিন যুগ্ম কর্তা ও এক জন আইনি অফিসারের একটি দল কলেজে আসে।
কলেজে ঢুকেই শিক্ষা দফতরের তদন্তকারী দলটি বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও কলেজের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েক জনকে ডেকে পাঠায়। কলেজ সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা রুদ্ধদ্বার ঘরে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বুধবার রাত পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। কলেজ সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা তারকেশ্বরবাবুর কাজকর্ম নিয়েই মূলত প্রশ্ন করেন। কলেজের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, তারকেশ্বরবাবু সাসপেন্ড হওয়ার পরেও পরিচালন সমিতির বৈঠকে থেকে পরবর্তী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কে হবেন তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এর জেরে আসলে তারকেশ্বরবাবুর হাতেই কলেজ পরিচালনার ক্ষমতা থেকে যাবে বলে শঙ্কা তাঁদের। তদন্তকারীদের কাছে বিষয়টি অনেকেই জানিয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে খবর। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, তারকেশ্বরবাবু শিক্ষক প্রতিনিধি হয়ে পরিচালন সমিতিতে ছিলেন। তাই পরিচালন সমিতির বৈঠকে তাঁর থাকা অবৈধ বলা যাবে না।
কয়েক সপ্তাহ খানেক আগে তারকেশ্বরবাবুর মদতে কলেজে তোলাবাজি চলছে বলে অভিযোগ জানিয়ে ৫০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষামন্ত্রী-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় চিঠি পাঠান। ওই চিঠি পেয়েই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সরিয়ে দিয়েই তদন্ত শুরু করবে শিক্ষা দফতর। সেই মতো গত ১০ জুন বিকেলে পরিচালন সমিতির বৈঠক চলাকালীন শিক্ষা দফতর তারকেশ্বরবাবুকে সাসপেন্ড করার চিঠি পাঠায়।
এ দিন কলেজ চত্বরে কড়়া পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা চোখে পড়ে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তকারীদের দলটি আসার আগেই জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজাও বলেন, “মঙ্গলবারই উচ্চশিক্ষা দফতর চিঠি দিয়ে আমাকে সমন্বয় করতে বলেছিল। আমি কলেজ-সহ বিভিন্ন জায়গায় তা জানিয়ে দিয়েছিলাম।”
তবে এ দিন কলেজের পড়ুয়াদের একাংশকে তারকেশ্বরবাবুর সমর্থনে দেওয়ালে পোস্টার সাঁটাতে দেখা গিয়েছে। তদন্ত চলাকালীন ওই পড়ুয়াদের কলেজের ভিতরে দাপিয়ে বেড়াতেও দেখা যায়। যদিও বিষয়টি নজরে পড়তেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তদন্তকারীদলের সদস্যরা। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সব পড়ুয়াদের সতর্ক করে দিতে দেখা যায় তদন্তকারীদলের এক সদস্যকে। তিনি ওই পড়ুয়াদের লক্ষ করে বলেন, ‘‘এ রকম ভাবে গলাবাজি করায় তদন্তের কাজে অসুবিধা হচ্ছে। এ রকম চলতে থাকলে তোমাদের নামে পুলিশকে জানাতে বাধ্য হব।’’ এরপরেই পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy