Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কিছুই পেলাম না, আক্ষেপ বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের ঠিকাকর্মীদের

সংস্থার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বার্নপুরের কারখানায় স্থায়ী ঠিকা শ্রমিকের সংখ্যাটা, প্রায় ১৫০ জন। ‘স্থায়ী’ অর্থাৎ, উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বরাত পাওয়া ঠিকাদার বদল হলেও এই শ্রমিকেরা বদল হবেন না।

জটলা: কারখানা চত্বরে ঠিকা শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার বার্ন স্ট্যান্ডার্ডে। নিজস্ব চিত্র

জটলা: কারখানা চত্বরে ঠিকা শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার বার্ন স্ট্যান্ডার্ডে। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত বণিক
বার্নপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫০
Share: Save:

ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে সংস্থার শ্রমিক-কর্মীদের জন্য বকেয়া-সহ স্বেচ্ছাবসরের সুবিধা মেটাতে টাকা বরাদ্দও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, বার্ন স্ট্যান্ডার্ডে কর্মরত ঠিকা শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ কী হবে। তাঁদের দাবি, শুনানিতে তাঁদের জন্য একটি কথাও খরচ করেননি শ্রমিক নেতৃত্ব।

সোমবার রাতেই শুনানিতে স্বেচ্ছাবসরের ‘প্রস্তাব’টা চলে এসেছিল সংস্থার বার্নপুর কারখানায়। মঙ্গলবার ভোর হতেই কারখানার গেটে জটলা বাড়তে শুরু করে শ্রমিকদের। সর্বত্রই গুঞ্জন, স্বেচ্ছাবসরে কত টাকা মিলতে পারে।

কিন্তু এই গুঞ্জনের মাঝেই দেখা গেল, এক দল শ্রমিককে। তাঁরা স্বেচ্ছাবসরের এই ‘হিসেব কষা’র তালিকাতেই নেই। তাঁদের যে পুরোটাই ক্ষতি! তাঁরা জানান, এনসিএলটি-র নিযুক্ত রেজোলিউশন প্রফেশনাল সোমবার শ্রমিক কর্মীদের বকেয়া, স্বেচ্ছাবসরের সুবিধা সংক্রান্ত যে ৪১৮ কোটি টাকার প্রকল্প জমা করেছে তাতে সংস্থার স্থায়ী ঠিকা শ্রমিকদের বাড়তি সুবিধা প্রদানের কোনও উল্লেখ নেই। অর্থাৎ ধনে-প্রাণে মারা যাচ্ছেন তাঁরা, এমনটাই দাবি ঠিকা শ্রমিকদের।

সংস্থার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বার্নপুরের কারখানায় স্থায়ী ঠিকা শ্রমিকের সংখ্যাটা, প্রায় ১৫০ জন। ‘স্থায়ী’ অর্থাৎ, উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বরাত পাওয়া ঠিকাদার বদল হলেও এই শ্রমিকেরা বদল হবেন না। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, কমবেশি তিন দশক ধরে এই শ্রমিকেরা স্থায়ী শ্রমিকদের মতোই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ওয়াগন তৈরি করেছেন। ঠিকা শ্রমিক গঙ্গা সেনগুপ্তর আক্ষেপ, ‘‘আমরা তো কিছুই পেলাম না। খালি হাতেই কাজ থেকে বসে যেতে হচ্ছে।’’ অন্য এক ঠিকা শ্রমিক গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘এ বার পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।’’ তাঁরা জানান, গত তিন দশকে তাঁদের সঞ্চয়ের পরিমাণ অল্পই। তা নিয়েই ফের নতুন করে শুরু করতে হবে জীবন।

ওই শ্রমিকদের পরিবারেও এখন আশঙ্কার ছায়া। স্বপ্না সেনগুপ্ত নামে এক জন বলেন, ‘‘স্বামী ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতেন। এ বার তো খালি হাতেই মাস ফুরোবে’’। ঠিকা শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, শ্রমিক সংগঠনগুলিও তাঁদের হয়ে সরব হয়নি নির্দিষ্ট জায়গায়। যদিও সংস্থা বাঁচাতে তৈরি হওয়া সেভ কমিটির আহ্বায়ক অনিল সিংহ বলেন, ‘‘আমরা এ নিয়ে আলেচনা করেছি। ঠিকা শ্রমিকদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার জন্য লাগাতার আন্দোলন শুরু হবে।’’ এ দিনই সংস্থা বন্ধের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বার্নপুরে একটি মিছিল করে সিটু। বার্নপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি কারখানার গেটে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে পা মেলান বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, ইস্কোর কর্মীরা এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

casual workers Burn Standard Close down
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE