বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে চলছে হাতাহাতি। নেমেছে পুলিশও। ছবি: উদিত সিংহ।
দেরি করে ফলপ্রকাশ এবং তাতে অজস্র ভুল থাকার অভিযোগ উঠছিলই। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ও বিকম পার্ট ২-এর মার্কশিট দেওয়া শুরু হতেই ধরা পড়তে লাগল আরও ভুল। প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি ক্যাম্পাস ঘিরে বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো ছাত্রছাত্রী। তবে সোমবারের মতোই অন্য টিএমসিপি-র মিছিলটিকে ঢুকতে দেওয়া হলেও এই মিছিলটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।
এ দিন দুপুর নাগাদ বর্ধমান স্টেশন থেকে প্রায় তিনশো পড়ুয়ার ওই মিছিলটি বের হয়। তবে রাজবাটি ক্যাম্পাসের কাছাকাছি আসতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে দেয় পুলিশ। ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময় টিএমসিপি-র দুই নেতা রাসবিহারী হালদার ও সন্তু ঘোষের নেতৃত্বে মিছিলটি থেকে কয়েকজন তাদের মারধর করতে উদ্যত হয়। টিএমসিপি-র সমর্থকদের সঙ্গে হাতাহাতিও বেধে যায়। তবে পুলিশ প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে বারবার অনুরোধের পরে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের পাঁচ প্রতিনিধিতে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকারীদের পাশে থাকা এসএফআই নেতা চন্দন সোম ও সৌমেন কার্ফার অভিযোগ, “ উপাচার্য পুলিশ ও টিএমসিপিকে দিয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন। তাই সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের গেটের বাইরে রেখে ভেতরে টিএমসিপি-র লোকেদের রাখা হচ্ছে।’’ যদিও উপাচার্য বলেন, “ টিএমসিপি সোমবারই আমার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার ব্যাপারে অনুমতি নিয়েছিল। কিন্তু আজ যারা বিক্ষোভ দেখাতে আসেন তাঁরা কোনও অনুমতি নেননি। তাই পুলিশ তাঁদের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি।”
টিএমসিপি-র শহর সভাপতি রাসবিহারী হালদার ও জেলার নেতা সন্তু ঘোষও বলে, “এ দিনের আন্দোলন এসএফআই পরিচালিত। তাদের সমস্ত জেলা নেতাই উপস্থিত থেকে এ দিন নেতৃত্ব দিয়েছে। এমনকী স্কুলের ছাত্রকে এনেও বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।”
তবে বিএ, বিএসসি পার্ট ২ পরীক্ষার নির্ভুল ফলাফল দ্রুত প্রকাশের দাবি করেছেন দু’পক্ষই। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উপাচার্যের কাছে স্নাতক স্তরের পার্ট ২-এর ফলাফলের অসঙ্গতি, বিচ্যুতি নিয়ে প্রশ্ন করে ছাত্রছাত্রীরা। প্রশ্ন ওঠে, যাঁদের মার্কশিট অসম্পূর্ণ বা যাঁরা অপ্রত্যাশিত নম্বর পেয়েছেন তা নিয়েও। উপাচার্য স্মারকলিপি নিতে চাননি বলেও অভিযোগ করেন পড়ুয়ারা। পরে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, ‘‘তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ওই কমিটি খতিয়ে দেখবে ফল প্রকাশে এত বিলম্ব কেন হয়েছে, কারা এর জন্য দায়ী। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরণের কোনও ঘটনা না ঘটে তাও দেখবে ওই কমিটি।” জানা গিয়েছে, ওই কমিটিতে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সমীর দাস, কলেজ সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার ও গুসকরা কলেজের অধ্যক্ষ তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির সদস্য স্বপনকুমার পান। এঁদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে স্মৃতিকুমারবাবু জানিয়েছেন।
তাঁর আরও আশ্বাস, ‘‘এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বিএ পার্ট ২ পরীক্ষার ফল প্রকাশের চেষ্টা চলছে।’’ তবে ২০১৫ সালের বিএ, বিএসসি ও বিকম পার্ট ৩ পরীক্ষা নির্ধারিত সূচি মেনে ২৮ এপ্রিল শুরু হচ্ছে না। পরীক্ষার নতুন নির্ঘন্ট কিছুদিনের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে বলেও উপাচার্যের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy