পূর্ব বর্ধমান-হুগলি সীমানা এলাকায় চলছে তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র
গলায় চেন পেঁচিয়ে খুনের ঘটনা শুরু হয়েছে ২০১৩ সাল থেকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ধরা যায়নি দুষ্কৃতীকে। বারবার একই কায়দায় দুষ্কর্ম করে পালিয়ে যাওয়া আততায়ীকে খুঁজে পেতে ছবি আঁকাল পুলিশ। বাজার, পেট্রোল পাম্প, খেয়াঘাট, চায়ের দোকান-সহ নানা জায়গায় সেই ছবি দেখিয়ে খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। কালনায় পুলিশি তৎপরতা শুরু হতে আততায়ী এ বার অন্য এলাকায় হানা দিচ্ছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। শুক্রবার হুগলির বলাগড়ে এক প্রৌঢ়াকে খুনের ঘটনায় সেই সন্দেহ বেড়েছে পুলিশের।
২০১৩ সালে মন্তেশ্বরে প্রথম এক বৃদ্ধাকে গলায় চেন পেঁচিয়ে খুন করা হয়। তার পরে সে বছর একই ভাবে এক মহিলাকে খুন করা হয় কালনার ধাত্রীগ্রামে। কোনওমতে আততায়ীর হাত থেকে প্রাণে বাঁচেন কালনার কদম্বা গ্রামের এক বধূ। মাঝে হামলা বন্ধ থাকলেও ফের তা শুরু হয় এ বছর। কালনা ২ ব্লকের আনুখাল এলাকায় খুন হন এক মহিলা। তাঁকেও খুন করা হয় সেই চেন পেঁচিয়েই। এর রেষ কাটতে না কাটতেই কালনার সুলতানপুর পঞ্চায়েতের উপলতি গ্রামে এক বৃদ্ধাকে একই ভাবে খুনের চেষ্টা করা হয়। আচমকা তাঁর ছেলে বাড়িতে এসে পড়ায় পালিয়ে যায় দুষ্কৃতী।
এই ঘটনার পরে নড়ে বসে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীকে খুঁজে বার করতে সতর্ক করা হয়েছে গ্রামেগঞ্জে থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারদের। কালনা থানার আশপাশের এলাকগুলিতে চলছে লাগাতার নাকাবন্দি। বারবার মিটার দেখার নাম করে বাড়িতে ঢুকে পড়া দুষ্কৃতীদের সম্বন্ধে পুলিশ সতর্ক করেছে রাজ্যের বিভিন্ন থানাকেই। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালনায় যে দু’জন মহিলা দুষ্কৃতীর হাত থেকে বেঁচেছেন তাঁদের মুখে বর্ণনা শুনে আততায়ীর একটি ছবি আঁকানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমান ছাড়াও একই কায়দায় দুষ্কৃতী-হানা হয়েছে হুগলিতে। জানুয়ারি থেকে এই রকম পাঁচটি ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের হিসাব। তবে এত দিন ঘটনাস্থলে আততায়ী চেন ফেলে গেলেও শুক্রবার বলাগড়ে একই রকম একটি কাণ্ডে ঘটনাস্থলে কোনও চেন পাওয়া যায়নি। সেখানে বিভা চডুই নামে বছর পঞ্চাশের এক মহিলার রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। শনিবার পূর্ব বর্ধমান-হুগলি সীমানায় পুলিশ নাকাবন্দি করে। পুলিশের অনুমান, কড়া নজরদারির কারণে দুষ্কৃতী চেন ছাড়াই এ বার চড়াও হয়েছে। কালনায় নিরাপত্তার কড়াকড়ির কারণে অন্য জায়গায় হানা দিচ্ছে দুষ্কৃতী, এমনটাও ধারণা পুলিশের।
কালনার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, বাড়িতে মিটার দেখার নাম করে ঢুকে এই ঘটনা ঘটাচ্ছে দুষ্কৃতী। কী উদ্দেশ্যে সে এমনটা করছে। তা স্পষ্ট নয়। তবে তাকে গ্রেফতার করতে আশপাশের জেলার পুলিশেরও সাহায্য দরকার। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই দুষ্কৃতীকে ধরার চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy