বর্ধমানের সিএমএস হাইস্কুলে সচেতনতা সভা। নিজস্ব চিত্র
এক দিকে লাগাতার প্রচার, আর এক দিকে ধরপাকড়— এই সাঁড়াশি আক্রমণেই ‘মোমো’ আতঙ্ক কাটাতে চাইছে জেলা পুলিশ।
শুক্রবারই কেতুগ্রামের শ্রীগ্রাম থেকে এক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই যুবক কাটোয়া কলেজের অঙ্ক অনার্সের এক ছাত্রের মোবাইলে ‘মোমো’ গেম খেলার বার্তা পাঠিয়েছিল। জেলা সাইবার সেলের ওসি স্নেহাশিস চৌধুরী তদন্তে নেমে জানতে পারেন, ওই যুবক একটি বিশেষ সফটওয়্যার ও অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশের ফোন নম্বর দিয়ে ‘মোমো’ খেলার ডাক পাঠিয়েছে। শুধু তাই নয়, অন্য মোবাইল থেকে ওয়াইফাই সংযোগ ‘হ্যাক’ করে সে এ কাজ করত বলে পুলিশের দাবি। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “যে নম্বর থেকে হোয়াটস অ্যাপ করা হয়েছে, বাস্তবে তার কোনও অস্তিত্বই নেই। আমরা সাইবার ক্রাইমের ধারায় মামলা রুজু করে আদালতে পাঠিয়েছি।’’
এ দিনই পুলিশ সুপার বর্ধমান শহরের বিসি রোডের একটি স্কুলে গিয়ে মোমো-আতঙ্ক থেকে দূরে থাকার জন্য শিক্ষক থেকে পড়ুয়াদের সচেতন করেন। তিনি বলেন, “মোবাইলে মোমো নিয়ে কোনও বার্তা বা লিঙ্ক এলে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানান।’’ জেলা সাইবার সেলের প্রচারেও বলা হচ্ছে, ‘মোমো চ্যালেঞ্জ’ অনলাইন প্রতারণার অন্যতম উপায়। এর মাধ্যমে ছবি বা ভিডিও তুলে ‘ব্ল্যাকমেল’ পর্যন্ত করা হতে পারে। পুলিশের দাবি, ‘মোমো চ্যালেঞ্জ’ বলে একাধিক ভুয়ো নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ করা হচ্ছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির (ইউআইটি) শিক্ষিকা সুদত্তা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিশেষ সফটওয়্যার বা অ্যাপের মাধ্যমে এটা করা যায়, সেটা আমরা হাতেকলমে করে দেখিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, প্রথমেই মনে রাখা দরকার, কোনও খেলার প্রস্তাব এলে তার সঙ্গে লিঙ্ক পাঠানো হবে। সেই লিঙ্ক ধরে গেমটা ডাউনলোড করার পরে খেলতে হবে। এখনও পর্যন্ত ‘লিঙ্ক’ পাঠিয়ে খেলার প্রস্তাব আসেনি। তা ছাড়া হোয়াটসঅ্যাপে যে ধরণের কথা হচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে পরিচিতরাই বদমাইশি করার জন্যে ‘মোমো’ বলে মেসেজ পাঠাচ্ছে। ঘাবড়ে গিয়ে আতঙ্ক না ছড়ানোর কথাও বলেছেন তিনি।
সাইবার সেলের দায়িত্বে থাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, “আমরা প্রতিটি অভিযোগের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy