শনিবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান এক রোগী। ছবি: সংগৃহীত।
বারবার পালানোর চেষ্টা করছেন রোগী, আর সিভিক ভলান্টিয়ারেরা তাঁকে ধরে নিয়ে আসছেন— চোখে পড়েছিল হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাঁদের পরিজনদের একাংশের। রবিবার ভোরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে শ্যামসায়র দিঘি থেকে অগ্নিদগ্ধ ওই রোগীর দেহ মিলল। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে অজ্ঞাতপরিচয় ওই অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে যায় বর্ধমান রেলপুলিশ। দোতলার সিঁড়ির সামনে একটি খাটে রেখে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তিনি হাসপাতাল থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান। রবিবার ভোরে সামনের শ্যামসায়রে তাঁর দেহ মেলে। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “অজ্ঞাতপরিচয় এক অগ্নিদগ্ধ রোগী শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশের কাছে রিপোর্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া এখনও পর্যন্ত কিছু জানা নেই।’’ পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে নজর এড়িয়ে ওই রোগী হাসপাতাল থেকে ‘নিখোঁজ’ হলেন, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১ জানুয়ারি মেমারির চাঁচাই গ্রামের আরতি মাঝির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় হাসপাতালে। পুলিশ দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানোর জন্য হাসপাতালে গিয়ে দেখে, দেহ উধাও। রাধারানি ওয়ার্ডের ৮ নম্বর ঘর থেকে দেহ নিয়ে আত্মীয়-পরিজনেরা চলে যান বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরে ওয়ার্ডে রক্ষীদের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। রবিবারের ঘটনায় তা ফের উঠেছে। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর সুশান্ত প্রামাণিক দাবি করেন, “এক সময় রক্ষী নিয়ে হাসাপাতালে টানাটানি ছিল। এখন ৮ জন সুপারভাইজার-সহ ২৯২ জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। তার পরেও সন্ধ্যায় এক জন অগ্নিদগ্ধ রোগী নিখোঁজ হন কী ভাবে, এর উত্তর খোঁজা জরুরি।’’
ওই অগ্নিদগ্ধ রোগীর আশপাশেই ছিলেন, এমন কয়েকজন রোগী ও তাঁদের পরিজনদের দাবি, বছর আটচল্লিশের ওই ব্যক্তি হিন্দিভাষী। তেমন কিছু বলতে পারতেন না। মাঝে-মাঝে চিৎকার করে উঠতেন। পালানোরও চেষ্টা করতেন। মুর্শিদাবাদের বড়ঞার চন্দন দাস, ইন্দাসের সান্ত্বনা সরকারদের দাবি, “শনিবারই দু’বার তাঁকে ধরে নিয়ে আসেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। সন্ধ্যায় আপাদমস্তক প্লাস্টিকের চাদর ঢেকে পালিয়েছেন।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এত বড় হাসপাতালে রোগীর চাপ খুব বেশি। এ ছাড়া হাসপাতাল থেকে বাইরে যাওয়ার একাধিক রাস্তা রয়েছে। ফাঁক গলে কে কী ভাবে পালিয়ে যাচ্ছেন, ধরা মুশকিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy