Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
প্রশ্নের মুখে বর্ধমান পুরসভা

বাঁকা নদীর পাড়েই শৌচকর্ম

রাজ্যকে নির্মল করতে বিভিন্ন জেলাতেই কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। বর্ধমানেও ‘নির্মল অভিযানে’ নামতে দেখা গিয়েছে জেলাশাসক থেকে মন্ত্রী, সকলকেই। কিন্তু খোদ বর্ধমান শহরেই বহু পরিবারে শৌচাগার নেই। কোথাও বা আবার গজিয়ে উঠেছে অবৈজ্ঞানিক শৌচাগার।

শহরে রয়েছে এমন শৌচাগার। —নিজস্ব চিত্র।

শহরে রয়েছে এমন শৌচাগার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

রাজ্যকে নির্মল করতে বিভিন্ন জেলাতেই কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। বর্ধমানেও ‘নির্মল অভিযানে’ নামতে দেখা গিয়েছে জেলাশাসক থেকে মন্ত্রী, সকলকেই। কিন্তু খোদ বর্ধমান শহরেই বহু পরিবারে শৌচাগার নেই। কোথাও বা আবার গজিয়ে উঠেছে অবৈজ্ঞানিক শৌচাগার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহর সাজানোর জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হলেও বর্ধমানকে ‘নির্মল’ করতে কোনও পদক্ষেপই করেনি পুরসভা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানকে ‘নির্মল জেলা’ হিসেবে গড়ে তোলা পরিকল্পনা রয়েছে। বাঁকা নদী সংস্কার করে সৌন্দর্যায়নেও নজর দিয়েছে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা (বিডিএ)। কিন্তু সেই নদীর পাড়েই ইছালাবাদ, ভাতছালা প্রভৃতি এলাকায় গজিয়ে উঠেছে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে তৈরি শৌচাগার। ছেঁড়া ত্রিপল, বস্তা, কোথাও বা রাস্তার ফ্লেক্স এনে চারপাশ ঘিরে শৌচাগার তৈরি হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশ জানান, রেল লাইন বা শহরের ভিতর দিয়ে যাওয়া সেচ খাল যেন ‘মুক্ত শৌচাগার’ হয়ে গিয়েছে!

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান পুরসভার রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত দারিদ্রসীমার নীচে থাকা ১২ হাজার ৫৯২টি ও দারিদ্রসীমার উর্ধ্বে থাকা ২৩ হাজার ১৬৯টি পরিবারে শৌচাগার নেই। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, শৌচাগার তৈরিতে বা সচেতনতা কর্মসূচি গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করেনি পুরসভা। অথচ বর্ধমান জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ‘মিশন নির্মল বাংলা’ অভিযানে বাঁশবাগান বা মাঠে-ঘাটে ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বারবার বলেছেন, “শৌচাগার তৈরি করলেই হবে না। এলাকাকে নির্মল করতে হলে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে।”

বর্ধমান শহরকে নির্মল করতে একাধিকবার পুরসভার সঙ্গে বৈঠকও করেছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলাশাসক। সেখানেও ‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে পুরসভার কাজ নিয়ে জেলা প্রশাসন যে খুশি নয়, তা ঠারেঠোরে পুর-প্রতিনিধিদের বুঝিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু এতকিছুর পরেও পুরসভার টনক নড়েনি বলে ক্ষোভ বাসিন্দাদের একাংশের! পুরসভার নিজস্ব হিসেবেই শহরে ৫৩৭৬টি অস্বাস্থ্যকর ও অবৈজ্ঞানিক শৌচাগার রয়েছে বলে সূত্রের খবর। বেশ কয়েক বছর আগে ওই সব শৌচাগার নির্মূল করতে পুরসভা উদ্যোগ করলেও কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি, তা এই হিসেবেই স্পষ্ট।

পুরসভার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েই পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “শৌচাগার তৈরিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এখনও মাঠে-ময়দানে সংগঠিত ভাবে আমরা নামতে পারিনি। তবে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। খুব দ্রুত শহরকে ‘নির্মল’ করতে পদক্ষেপ করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Households No Toilet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE