বন্ধ করে দেওয়া হবে ইসিএলের মোট ১৬টি ভূগর্ভস্থ খনি— সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কয়লা মন্ত্রক। সেই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে এই এলাকার একটি খনিও। লোকসভা ভোটের আগের চর্চায় ঘুরেফিরে আসছে সেই সিদ্ধান্তের কথাই। অন্য খনিগুলির ভবিষ্যৎ কী, প্রশ্ন উঠছে প্রচার-আলোচনায়। আর তার সঙ্গে উঠছে এখনও না মেলা পুনর্বাসনের কথাও।
পাণ্ডবেশ্বরে ইসিএলের মোট খনি ৩২টি। তার মধ্যে নাকরাকোন্দা খনিটি বন্ধ হতে চলেছে বলে শ্রমিক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘প্রচুর কয়লা থাকা সত্ত্বেও খনিগুলি হয় বন্ধ, বা বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমরা প্রচারে মানুষকে সে কথা জানাচ্ছি।’’ একই অভিযোগ পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিরও। তাঁর কথায়, ‘‘খনির ক্ষতি হলে এলাকার অর্থনীতিটাই ভেঙে পড়বে। অথচ, এই বিষয়টা এলাকার বিজেপি সাংসদ বা কেন্দ্রীয় সরকার তেমন গুরুত্বই দেন না।’’ বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। উত্তর মেলেনি এসএমএসেরও। তবে বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘অলাভজনক খনিই বন্ধ হচ্ছে। শ্রমক্ষেত্রে কেন্দ্রের নানা জনমুখী প্রকল্পই আমাদের প্রচারের হাতিয়ার।’’
ভোটের মরসুমে চর্চায় পুনর্বাসনও। বিজেপির অভিযোগ, কয়লা মন্ত্রক সাত বছর আগে পুনর্বাসনের টাকা দিলেও রাজ্য সরকারকে সেই কাজ করতে পারেনি। সিপিএমেরও অভিযোগ, শোনপুর বাজারি গ্রাম, বিলপাহাড়ি-সহ বেশ কিছু এলাকায় পুনর্বাসনের দাবি দীর্ঘদিনের। প্রচারে দুই দলেরই প্রতিশ্রুতি, তারা জিতলে গতি আসবে পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পুনর্বাসনের জন্য প্রথমে ‘নোডাল এজেন্সি’ করা হয় এডিডিএ-কে। তাদের দায়িত্ব ছিল, পুনর্বাসনের জন্য জমি চিহ্নিত করা এবং আবাসন তৈরি। বছরখানেক আগে আবাসন তৈরির দায়িত্ব পায় রাজ্য সরকারের আবাসন দফতর। এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ইতিমধ্যেই ২৯ হাজার আবাসন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজার আবাসনের কাজ চলছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০১১ সালে সীমানা পুনর্বিন্যাসের পরে পাণ্ডবেশ্বর ও ফরিদপুর-দুর্গাপুর ব্লক নিয়ে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্র তৈরি হয়। সে বার বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় জিতেছিলেন। কিন্তু ২০১৪ লোকসভা ভোটে এখানে এগিয়ে যান তৃণমূল প্রার্থী। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী জিতেন্দ্রবাবু জিতলেও দু’বছর আগের তুলনায় ভোটের ব্যবধান কমে যায়।
এ বার আসানসোল লোকসভা আসনে সিপিএম প্রার্থী করেছে দলের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গবাবুকে। দলের নেতাদের দাবি, তাঁরা ফের এলাকায় শক্তি বাড়িয়েছেন। সিপিএম নেতা তুফান মণ্ডলের দাবি, ২০১১-র পরে ১৬টি কার্যালয় দখল হয়েছিল। এ বার ইতিমধ্যে তাঁরা দু’টি পুনরুদ্ধার করেছেন। বিজেপি নেতৃত্বের আবার দাবি, ২০১৪-র আগে এই কেন্দ্রে তাঁদের কোনও কার্যালয়ই ছিল না। এখন রয়েছে দু’টি। তৃণমূল বিধায়ক তথা আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্রবাবু অবশ্য বিরোধীদের এ সব কথা আমল দিতে নারাজ। তিনি দাবি করেন, গত কয়েক বছরে বিরোধী দল থেকে কর্মী-সমর্থকেরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy