Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
general-election-2019/west-bengal

মাটি সরে যাচ্ছে বুঝেই ছাপ্পা, দাবি বিরোধীদের

সিপিএমের অভিযোগ, কেতুগ্রাম ১ ব্লকের ১৮টি বুথে দিনভর ও ৫৫টি বুথে আংশিক ভাবে ছাপ্পা দিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির অভিযোগ, এই ব্লকের ৭৬টি বুথে অবাধ ভোট না হওয়ায় তারা পুনর্নিবাচনের দাবি তুলেছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সুচন্দ্রা দে
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

গত দু’টি ভোটের ফল দেখে কেতুগ্রাম ২ ব্লক নিয়ে চিন্তায় ছিলেন শাসকদলের নেতারা। তবে কেতুগ্রাম ১ ব্লকে দলের ফল নিয়ে বরাবরই আত্মবিশ্বাসী তাঁরা। কিন্তু ভোটের দিন সেই এলাকার বিভিন্ন বুথেই ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিরোধীদের দাবি, কেতুগ্রাম ১ ব্লকেও জমি হারাচ্ছে বুঝে এই পন্থা নিতে হয়েছে শাসকদলকে। তৃণমূল অবশ্য ছাপ্পার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

২০১৪-র লোকসভা ও ২০১৬-র বিধানসভা, দু’টি নির্বাচনেই তৃণমূল কেতুগ্রাম ২ ব্লকে পিছিয়ে ছিল। তবে কেতুগ্রাম ১-এ ‘লিড’ ছিল তাদের। ২০১৬ সালে কেতুগ্রাম ১-এ এগিয়ে থাকার সুবাদেই বিধানসভা আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে কেতুগ্রাম ১ ব্লক থেকে বড় ‘লিড’ পাওয়া নিয়ে এ বার তাঁরা আত্মবিশ্বাসী বলে দাবি করেছিলেন দলের নেতারা।

কিন্তু সোমবার ভোট শুরুর পর থেকেই কেতুগ্রাম ১ ব্লকের নানা এলাকা থেকে বিভিন্ন অভিযোগ উঠতে শুরু করে। রাজুরের ৫টি, পান্ডগ্রামের ৩টি, পালিটার ৩টি, কান্দরার ৫টি, বেরুগ্রামের ৫টি, আনখোনার ৫টি ও আগরডাঙার ১৫টি বুথে ছাপ্পা ও ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের লোকজনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে রাজুর পঞ্চায়েতের খাঁজির দুই বুথে প্রিসাইডিং অফিসার বদল করে নির্বাচন কমিশন। এর পরে আমগড়িয়ার ৫১ নম্বর বুথে ভোটদানের সময়ে ইভিএমে নজরদারির অভিযোগ ওঠে। বেরুগ্রামের দু’টি বুথেও একই অভিযোগ ওঠে। সিপিএমের অভিযোগ, কেতুগ্রাম ১ ব্লকের ১৮টি বুথে দিনভর ও ৫৫টি বুথে আংশিক ভাবে ছাপ্পা দিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির অভিযোগ, এই ব্লকের ৭৬টি বুথে অবাধ ভোট না হওয়ায় তারা পুনর্নিবাচনের দাবি তুলেছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিরোধীদের দাবি, তৃণমূলের এই এলাকার পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল দলের নেতাদের কেতুগ্রাম বিধানসভা এলাকা থেকে ৫০ হাজার ভোটে ‘লিড’ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন। কিন্তু কেতুগ্রাম ২ ব্লকে বরাবর বামেদের সংগঠন মজবুত। তাই সেখান থেকে ‘লিড’ পাওয়ার সম্ভাবনা কম বুঝেই কেতুগ্রাম ১ ব্লকে মরিয়া হয়ে উঠেছিল শাসকদল। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, গত কয়েক বছরে, বিশেষত দলের নেতা জাহের শেখের মৃত্যুর পরে এই ব্লকে সংগঠনে রাশ কিছুটা আলগা হয়েছে। মাথাচাড়া দিয়েছে বিরোধীরা। গড় বাঁচানো নিয়ে সংশয়ে পড়ে ভোটের আগে তৃণমূলের লোকজন খলিপুর, বামুন্ডির মতো নানা গ্রামে ভয় দেখানো শুরু করে বলেও অভিযোগ বিরোধীদের।

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তমাল মাজির অভিযোগ, ‘‘গত বিধানসভা ভোটেও তৃণমূল এই ব্লকের ৭১টি বুথে ছাপ্পা দিয়ে জিতেছিল। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে না পারার ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল এলাকাবাসীর মধ্যে। সেই ভয়ে ছাপ্পা ভোটে দিয়েছে তৃণমূল।’’ স্থানীয় বিজেপি নেতা চাঁদকুমার সাহার অবশ্য দাবি, ‘‘ছাপ্পা দিয়েও তৃণমূল ৫০টি বুথে এগিয়ে থাকতে পারবে কি না সন্দেহ আছে। বাকি ৯৬টি বুথে আমরাই এগিয়ে থাকব।’’

কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘কোথাও কোনও ছাপ্পা ভোট হয়নি। এলাকায় বিরোধীদের দেখাই যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নেই মানুষ আস্থা রাখছেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE