গোলমাল অণ্ডালের ধান্ডাডিহিতে। নিজস্ব চিত্র
এক পক্ষের অভিযোগ, প্রচারে বাধা। অন্য পক্ষের অভিযোগ, মারধর করা হয়েছে। এই অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে তেতে রইল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ের বৃহস্পতিবারের ভোট-প্রচার। অণ্ডালের ধান্ডাডিহি গ্রামের ঘটনা।
এ দিন দুপুরে বাবুল সদলবলে গ্রামের ভট্টাচার্যপাড়া কালী মন্দির লাগোয়া এলাকায় প্রচারে আসেন। সেখানে বাবুলের কাছে এক বৃদ্ধা বিধবাভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। বাবুল তাঁকে বলেন, ‘‘এটা তো রাজ্য সরকার দেয়। কেন দিচ্ছে না, তা ওদের কাছেই জানতে হবে।’’ এর পরেই বাবুল শিল্পাঞ্চলে কয়লা, বালি, লোহা চুরি এবং সিন্ডিকেটের রমরমার অভিযোগ করেন। তাঁর আরও অভিযোগ, এই সব ‘চুরি’-তে মদত রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের। তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিজেপির অভিযোগ, বাবুলের অভিযোগের পরেই স্থানীয় দিব্যেন্দু লায়েক নামে এক জন বিজেপি প্রার্থীকে পাল্টা কিছু কথা বলেন। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এর পরেই বাবুল বিজেপি কর্মীদের বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের প্রচারে বাধা দেওয়ার জন্য এসেছে। একে চড় মেরে ছুড়ে ফেলে দাও।’’ নিজেকে যুব কংগ্রেস কর্মী দাবি করে, পেশায় খনিকর্মী দিব্যেন্দুবাবুর অভিযোগ, ‘‘প্রচারে বাধা দেওয়া হয়নি। বিজেপি প্রার্থীর ওই কথার পরেই ওই দলের নেতা, কর্মীরা আমাকে মারধর করে সরিয়ে দেন।’’ বিজেপি নেতৃত্ব যদিও বিদায়ী সাংসদের এমন মন্তব্য ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এর পরে বাবুল প্রচার করতে করতে গ্রামের সীমানায় একটি মাঠের পাশে চলে যান। বিজেপির অভিযোগ সেই সময়ে শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক জন তাঁদের বলেন, ‘‘প্রচার শেষ হয়ে গিয়েছে। এ বার আপনারা চলে যান।’’ তৃণমূলের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় বিজেপির প্রার্থীর উপস্থিতিতে ওই দলের নেতা, কর্মীরা শ্যামলবাবুকে মারধর করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্যামলবাবু এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। বাবুলের দাবি, ‘‘আমি না থাকলে তৃণমূলের ওই কর্মীকে মেরে হাড় ভেঙে দিত দলের ছেলেরা।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই জোড়া ঘটনার পরেই বাবুল প্রচারে বাধার অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে নিশানা করেন পুলিশ-প্রশাসনকেও। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, ‘‘একটা রাজনৈতিক দল পুলিশের অনুমতি নিয়ে প্রচার করছে। সেখানে অন্য দলের লোকজন ঢুকে বিশৃঙ্খলা করছে কী ভাবে। পুলিশের এটা দেখা দরকার।’’ অণ্ডাল থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। যদিও এলাকার তৃণমূল নেতা অজয় পাত্রের দাবি, ‘‘কোনও বাধা দেওয়া হয়নি। প্ররোচনা ছাড়াই আমাদের দলের এক কর্মী-সহ দু’জনকে মারধর করেছেন বিজেপির লোকজন।’’ তবে এ দিন বিকেল পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি। তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, “গ্রামে একটা অশান্তি হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু, তাতে দলের কেউ জড়িত নন।’’
পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy