চরমে উঠেছে মাটি মাফিয়াদের ‘দৌরাত্ম্য’। তারা রাস্তার পাশের জমিতে গভীর খাল কেটে মাটি তুলে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে যে কোনও সময়ে ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। শুক্রবার সকালে এমনই অভিযোগ তুলে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের নিমদহ পঞ্চায়েতের মধুপুর এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জামালপুর-ছাতনি রাস্তা অবরোধ করেন। পুলিশ মাটি কাটা বন্ধের আশ্বাস দিলে ঘণ্টা খানেক পরে অবরোধ ওঠে।
অবরোধকারীদের দাবি, গত বছর থেকে শুরু হয়েছে বেআইনি ভাবে মাটি কাটা। মাটি মাফিয়ারা রাস্তার দু’পাশের জমিতে ২৫-৩০ ফুট গর্ত করে সেখান থেকে মাটি তুলে চড়া দামে বিক্রি করে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত আকারে তা জানালেও কাজের কাজ কিছু হয় না। এখনও চলছে ব্যাপক হারে মাটি কাটা, দাবি তাঁদের। অবরোধকারীদের আশঙ্কা, রাস্তার দুপাশে রীতিমতো খাল করে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে আশপাশের বাড়িগুলি ধসে পড়তে পারে। সারাদিন ট্রাক্টর-সহ বিভিন্ন গাড়িতে মাটি নিয়ে যাওয়া হয়। রাস্তাতে পড়ে থাকে মাটি। এক পশলা বৃষ্টি হলে কর্দমাক্ত হয় রাস্তা। দুর্ঘটনায় পড়েন অনেকে।
এলাকার বাসিন্দা সনাতন গোস্বামীর অভিযোগ, যত বেশি মাটি কাটা হচ্ছে, তত ধস নেমে বিপদের আশঙ্কা বাড়ছে। বিডিও, থানা, মহকুমাশাসকের কার্যালয়, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে মাটি কাটা বন্ধের আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। এই বেআইনি কাজ বন্ধ করতে বললে মাটির অবৈধ কারবারের সঙ্গে যুক্ত লোকজন হুমকি দিচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁরা পথ অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছেন। তাঁর দাবি, অবরোধ তুলতে এসে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এই বেআইনি কাজ বন্ধ করা হবে। এর পরেও যদি তা না হয়, তবে আরও বড় আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হবে।
আর এক অবরোধকারী নিতাই মাহিষ্যদাসের দাবি, গত বছর থেকে এই কারবার চলছে। ওই এলাকা থেকে মাটি নিয়ে গিয়ে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে আশপাশে। মাটি কাটার ফলে যে লম্বা লম্বা খালগুলি তৈরি হয়েছে, তাতে পড়ে গিয়ে যে কোনও শিশুর বড় বিপদ হতে পারে। তা-ই বেআইনি ভাবে মাটি কাটা বন্ধে প্রশাসন যাতে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়, সেই উদ্দেশ্যেই এ দিনের পথ অবরোধ কর্মসূচি। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, কী ভাবে ওই এলাকায় মাটি কাটা চলছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)