সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী চাকরির বাতিল হয়েছে। কে যোগ্য, কে অযোগ্য— তা এখনও বাছাই করা সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে চাকরিহারারা পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, যোগ্যদের চাকরি ফেরত দিতে হবে! তবে চাকরিহারাদের এই বিক্ষোভে স্কুলপড়ুয়াদের হাতে প্ল্যাকাড, মুখে স্লোগান! এমনই ছবি দেখা গেল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে ব্লক প্রশাসন। স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর বেজায় চটেছে তারা। কেন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পড়ুয়ারা, জানতে চেয়ে জামালপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকাকে নোটিস পাঠানো হয়েছে।
জামালপুরের ওই স্কুলে এখন ৬০০ জনের বেশি পড়ুয়া পড়াশোনা করে। স্কুলের ১০ জন স্থায়ী শিক্ষিকা। তবে তাঁদের মধ্যে এক জন চাকরি হারিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে। তারই প্রতিবাদে শিক্ষিকারা পথে নেমেছিলেন বৃহস্পতিবার। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে মিছিলে দেখা যায় স্কুলের ছাত্রীদেরও! প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে তারা এলাকা পরিদর্শন করে। স্লোগানে বার বার ‘সুবিচারের’ কথা শোনা যায়। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন ওঠে নানা মহলে। স্কুলে পঠনপাঠন ছেড়ে কেন পড়ুয়াদের মিছিলে হাঁটানো হল? কেন বিচারাধীন বিষয়ে স্কুলের ছাত্রীদের পথে নামানো হল?
বিষয়টি জানতে পেরেই পদক্ষেপ করে ব্লক প্রশাসন। জামালপুরের বিডিও পার্থসারথি দে বলেন, ‘‘আদালতে বিচারাধীন একটা বিষয় নিয়ে স্কুলের ছাত্রীদের পথে নামানোটা সঠিক কাজ হয়নি। স্কুলে পড়াশুনা করতে আসা ছাত্রীদের আন্দোলনের ঢাল করে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভুল কাজ করেছেন। স্কুলের পরিচালন কমিটিকে অন্ধকারে রেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই কাজ করছে।’’ জেলার মহকুমাশাসকও এই ঘটনায় অসন্তুষ্ট। প্রধানশিক্ষিকার কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জবাবদিহি করা হয়েছে।
কেন ছাত্রীদের মিছিলে হাঁটানো হল, এই বিষয় নিয়ে জামালপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কাজরি বিশ্বাসের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও উত্তর না দিয়েই ফোন কেটে দেন। এই প্রসঙ্গে স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি মিঠু পাল বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষিকা নিজে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে এ সব করেছেন।’’ জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্রীমন্ত রায় বলেন, ‘‘কাদের ইন্ধনে স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন একটা কাণ্ড ঘটালেন তার তদন্ত হওয়া অত্যন্ত জরুরি।’’