Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চালুর পরে বছর পার, মহিলা হস্টেল ফাঁকাই

উদ্বোধনের পরে বছর ঘুরে গিয়েছে। কিন্তু চালু হয়নি দুর্গাপুরে কর্মরতা মহিলাদের জন্য তৈরি হস্টেল। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হস্টেলটি মাসের পর মাস ফাঁকা পড়ে রয়েছে। প্রশাসনের তরফে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরেও সাড়া মেলেনি। বণিকসভার কর্তাদের দাবি, কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়ার জন্যই এমন পরিস্থিতি।

সেই হস্টেল। —নিজস্ব চিত্র।

সেই হস্টেল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪১
Share: Save:

উদ্বোধনের পরে বছর ঘুরে গিয়েছে। কিন্তু চালু হয়নি দুর্গাপুরে কর্মরতা মহিলাদের জন্য তৈরি হস্টেল। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হস্টেলটি মাসের পর মাস ফাঁকা পড়ে রয়েছে। প্রশাসনের তরফে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরেও সাড়া মেলেনি। বণিকসভার কর্তাদের দাবি, কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়ার জন্যই এমন পরিস্থিতি।

হস্টেলটি গড়ে তুলেছে রাজ্যের আবাসন দফতর। বাম আমলের শেষ দিকে নানা শিল্প সংস্থা আসায় দুর্গাপুরে বেশ কিছু কল-কারখানা, স্কুল-কলেজ, হোটেল, আবাসন গড়ে ওঠে। বিভিন্ন সংস্থা দক্ষিণবঙ্গের অফিস খোলার জন্য বেছে নেয় এই শহরকে। ফলে, বাইরে থেকে এই শহরে আসা মানুষজনের সংখ্যা বেড়ে যায় অনেকটা। তাঁদের অনেকেই মহিলা। কাজ বা কোনও প্রশিক্ষণের জন্য বাইরে থেকে এই শহরে আসা মহিলাদের থাকার সুবিধের কথা মাথায় রেখে একটি হস্টেল গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০০৮ সালে সিটি সেন্টার এলাকায় রেন্টাল হাউসিং এস্টেটে কর্মরতা মহিলাদের জন্য হস্টেল গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় আবাসন দফতর। তৎকালীন মন্ত্রী রেখা গোস্বামী শিলান্যাস করেন। শেষ পর্যন্ত হস্টেল ভবন গড়ার কাজ শেষ হয় ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে হস্টেলটির উদ্বোধন করেন আবাসন ও যুব কল্যাণ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আপাতত ৪০ জন এই হস্টেলে থাকতে পারবেন। পরে দরকার হলে উপরে আরও দু’টি তলা গড়ে তোলা হবে।

উদ্বোধনের সময়ে অল্প কিছু কাজ বাকি ছিল। সে সব শেষ হলে মহকুমা প্রশাসনের তরফে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পাঁচ-সাত জন যোগাযোগ করেছেন। এ ছাড়া পুরসভা পরিচালিত হস্টেলটি থেকে কয়েক জনের এখানে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্ধেক আসনও ভর্তি হলে হস্টেলটি চালু করে ফেলা হবে।’’ দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘তেমন সাড়া মেলেনি ঠিকই। তবে আশা করছি শীঘ্র ইতিবাচক কিছু হবে।’’

বেঙ্গল সুবার্বান চেম্বার অফ কমার্স-এর সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল ঘোষের দাবি, সরকারি সিদ্ধান্ত পরিস্থিতির বিচার করেই নেওয়া উচিত। তা না হলে তা কাজে আসে না। তাঁর কথায়, ‘‘যে সময়ে এই হস্টেল গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল তখন দুর্গাপুরের পরিস্থিতি একেবারে অন্য রকম ছিল। কিন্তু শেষ কয়েক বছরে তা বদলে গিয়েছে। কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরির তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। উল্টে কাজের সুযোগের সঙ্কোচন হচ্ছে।’’ দুর্গাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সেই সময় যে হস্টেলটি ছিল সেখানে কর্মরতা মহিলাদের স্থান সঙ্কুলান হত না। সেই কারণেই নতুন হস্টেলটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।’’ তিনিও দাবি করেন, ‘‘গত কয়েক বছরে রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি বেহাল হয়ে পড়েছে। তার ছাপ পড়েছে দুর্গাপুরেও।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE