কারখানার গেটে শ্রমিকদের জটলা। —নিজস্ব চিত্র।
শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে কোন্দল ফের সামনে এল দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে (এএসপি)। বৃহস্পতিবার সকালে আইএনটিটিইউসি সমর্থক দু’দল ঠিকা শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষে জখম হলেন চার জন। গোলমাল পাকানোর জন্য পরস্পরের দিকে আঙুল তুলেছে দু’পক্ষই।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কর্তৃপক্ষ একটি নির্দেশিকায় জানান, ঠিকা শ্রমিকদের যে সব সংগঠন কারখানায় রয়েছে, সেগুলির বৈধতা যাচাই করা হবে। সংগঠনগুলিকে সে জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে বলা হয়। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ‘অ্যালয় স্টিল কন্ট্রাক্ট্রার্স ওয়ার্কমেন্স ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক অশোক কুণ্ডু জানান, সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি, দুর্গাপুরের বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁরা ১১ ফেব্রুয়ারি কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে ঠিকা শ্রমিক সংগঠনগুলির বৈধতা যাচাইয়ের আর্জি জানান। অশোকবাবুর দাবি, এর পরেই কর্তৃপক্ষ এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁদের সংগঠনের তরফে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়।
অশোকবাবু অভিযোগ করেন, আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের পক্ষ নিয়ে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই অন্য একটি গোষ্ঠী কারখানার ভিতরে আগের মতো সংগঠন পরিচালনা করছে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই গোষ্ঠীর কয়েক জন তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালায় বলে তাঁর অভিযোগ। সংগঠনের অন্য পক্ষের যদিও পাল্টা অভিযোগ, তাঁদের উপরে হামলা চালিয়েছেন অশোকবাবুর অনুগামীরাই। ঘটনায় দু’পক্ষের দু’জন করে মোট চার জন জখম হন।
এই কারখানায় এর আগেও বারবার আইএনটিটিইউসি-র দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়েছে। সংগঠনের উচ্চ নেতৃত্ব বারবার ‘এক কারখানায় একটি সংগঠনের’ পক্ষে সওয়াল করলেও দুর্গাপুরের নানা সংস্থাতেই একাধিক সংগঠন রয়েছে। রাজ্য সরকারি সংস্থা ডিপিএল, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিএসপি থেকে শুরু করে বহু বেসরকারি কারখানায় এই রেওয়াজ চলে আসছে। গত বছর জুলাইয়ে এএসপি-র বিভাগীয় প্রতিনিধি নির্বাচনে আইএনটিটিইউসি-র দু’টি গোষ্ঠীই প্রার্থী দেয়। ফল বেরোলে দেখা যায়, জয়ী হয়েছে আইএনটিইউসি। তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি।
এ দিন সংঘর্ষে জখম করমচাঁদ মাহাতো বলেন, “আমরা প্রভাতবাবুর নেতৃত্বে আস্থা রেখে সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনা করি। অশোকবাবুর নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতী এ দিন আমাদের উপরে হামলা চালায়।” অশোকবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “আমাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র আছে। ইতিমধ্যে তা কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে জমাও দিয়েছি। আমাদের গায়ের জোর দেখানোর দরকার নেই।” তিনি এ দিন আরও দাবি করেন, “প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্রয়ে সংগঠনের নাম করে একটি গোষ্ঠী কারখানায় কাজকর্ম চালাচ্ছে। আমরা তা বন্ধ করতে চাই। উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে আমরা চাই, একটি কারখানায় একটিই সংগঠন থাকুক।” প্রভাতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy