রাস্তার ধারের হোটেল, তো বটেই ছোটখাটো বহু দোকানেও মেলে বেআইনি মদ। সহজে মদের জোগান পেয়ে অনেকেই নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালান। ঘটে দুর্ঘটনাও। অথচ চালক মদ্যপান করে গাড়ি চালাচ্ছেন কি না তা পরীক্ষা করার যন্ত্রই নেই কালনা পুলিশ, প্রশাসনের কাছে। পুলিশের অবশ্য দাবি, টাকার অভাবেই কেনা হয়নি ওই যন্ত্র।
দিন তিনেক আগেই মন্তেশ্বরের জয়রামপুর সেতুর কাছে দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ঝাড়খণ্ডের চার খেতমজুরের। কুসুমগ্রাম-মালডাঙা রাস্তার পাশে ট্রাক্টরে ধানবোঝাই করছিলেন তাঁরা। তখনই গাড়িটি এসে ধাক্কা মরে ট্রাক্টরটিকে। গাড়িতে থাকা শেখ মহম্মদ সাহিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি দাবি করেন, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন মন্তেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক চৌধুরী মহম্মদ হেদায়তুল্লার ছেলে হামিদুল্লা চৌধুরী। ঘটনার দিন নবদ্বীপ রোডের একটি হোটেল থেকে মদ্যপান করে ফিরছিলেন বলেও তাঁর দাবি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এসটিকেকে রোড, কালনা-পাণ্ডুয়া রোড, কালনা-বর্ধমান রোডেও নেশা করে গাড়ি চালাতে দেখা যায় আকছার। দিনের থেকে রাতে এই প্রবণতা বাড়ে আরও। কালনা শহরের বেশ কিছু রাস্তাতেও গভীর রাত পর্যন্ত দ্রুত গতিতে বেপরোয়া মোটরবাইক চালাতে দেখা যায় কয়েকজন যুবককে। তাঁদের অনেকেই মদের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকেন বলে শহরবাসীর দাবি। শুধুকে অন্যকে আঘাত করা নয়, মদ খেয়ে গাছে ধাক্কা মেরে জখম হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতেও প্রায়ই কমবয়সীদের দেখা যায় বলে তাঁদের দাবি।
দুর্ঘটনা কমাতে ‘সেভ লাইফ, সেফ ড্রাইভ’ কর্মসূচি নিয়েছে প্রশাসন। সচেতনতামূলক মিছিল, চালকদের নিয়ে সভা, হেলমেট না থাকা চালকদের ‘গাঁধীগিরি’ করে গোলাপ বিলিও দেখা যায় প্রায়শই। কিন্তু দুর্ঘটনা যেন পিছু ছাড়ছে না। পুলিশের দাবি, রাস্তার জরুরি মোড়ে তল্লাশি, নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব যে রয়েছে তা মেনেও নিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। যেমন নেই ‘ব্রেথ এনালাইজার’ যন্ত্র। এই যন্ত্রের সাহায্যে চালক মদ খেয়েছেন কি না, বা খেলে কতটা তা বোঝা যায়। কালনা মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও দাবি, আঘাতপ্রাপ্ত কতখানি নেশায় ছিলেন তা জানা গেলে চিকিৎসার সুবিধে হয়। বিশেষত, মোটরবাইক চালকদের ক্ষেত্রে। ওই যন্ত্রটির প্রয়োজনীয়তার কথা জেলায় জানানো হয়েছে বলেও সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইয়ের দাবি।
কালনার এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায়ও বলেন, ‘‘যন্ত্রটি কেনার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন বর্তমানে তা আমাদের কাছে নেই। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy