আউশগ্রামের কর্মিসভায় অনুব্রত মণ্ডল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
এলাকা থেকে কত ‘লিড’ দিতে পারবেন, আউশগ্রামেও নেতাদের কাছ থেকে লিখিত ‘প্রতিশ্রুতি’ নিলেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামের পর্যবেক্ষক পদেও রয়েছেন। রবিবার আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লকে কর্মিসভায় নেতা-কর্মীদের তাঁর হুঁশিয়ারি, “আমরা এত উন্নয়ন করেছি। তার পরেও ‘লিড’ হবে না কেন? সবাই কান খুলে শুনে রাখুন, যে অঞ্চলে জিততে পারব না, সেখানকার সভাপতিদের সরিয়ে দেওয়া হবে।’’
আউশগ্রাম ২ ব্লকের অমরপুর, রামনগর, ভেদিয়া, দেবশালা, কোটা, ভাল্কি, এড়াল অঞ্চলের সভাপতিদের কাছ থেকে ‘লিড’-এর হিসাব নেওয়া হয়। তার পরে কোন বুথে কেন দল পিছিয়ে থেকেছে, তার ব্যাখ্যা শোনেন। বিভিন্ন বুথের কমিটি ও মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। আগের নির্বাচনে সামান্য ভোটে এগিয়ে থাকা কোনও অঞ্চলের সভাপতি এ বার তিন-চার হাজার ‘লিড’ দেওয়ার আশ্বাস দিলেই পাল্টা প্রশ্ন ছুটে এল, ‘‘কী ভাবে জিতবেন?’’ তার পরেই অবশ্য দাবি করলেন, ‘‘বড় অঞ্চল, পাঁচ হাজার ভোটে লিড চাই। সব রকম মদত করব।’’
ভাল্কি অঞ্চলে গত বিধানসভা ভোটে সিপিএমের চেয়ে ১৪১৩ ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। সে কথা জানিয়ে অনুব্রত বলেন, ‘‘বাড়ি-বাড়ি যান। বুথে-বুথে বসুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কথা বলুন। ফল বেরনোর পরে যাতে পদ থেকে সরাতে না হয়, এমন ফল উপহার দিন।’’ আউশগ্রাম ১ ব্লকের আউশগ্রাম অঞ্চলে ১৬৪৩ ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। নেতা-কর্মীদের অনুব্রতের প্রশ্ন, “রাস্তায় ঢেকে দিলাম। তাহলে ভোট নেই কেন?” উক্তা অঞ্চলের নেতা সভায় আসেননি শুনে অনুব্রত তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। বেরেন্ডা, দিগনগর ২, গুসকরা ২ অঞ্চল সভাপতিরা যে ‘লিড’ দিতে পারবেন বলে জানান, তাতে সন্তুষ্ট হননি অনুব্রত। তিনিই হিসাব কষে ‘লিড’ ঠিক করে দেন। কাউকে জানান, এই ‘লিড’ রাখতে পারলে ১০১টি রসগোল্লা খাওয়াবেন, আবার কাউকে গণনার পরের দিন থেকে রাস্তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন কি না, সে প্রশ্নও করেন কাউকে-কাউকে।
২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী, গুসকরা পুরসভার ২৯টি বুথের মধ্যে ১১টিতে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। প্রাক্তন পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের কাছে অনুব্রত জানতে চান, নিজের বুথে কত ‘লিড’ পাবেন। বুর্ধেন্দু বলেন, ‘‘৪০০ ভোটে।’’ অনুব্রত পাল্টা বলেন, ‘‘৮০০ ভোটে জিততে হবে। গুসকরায় ৫০০০ ভোটে জিততে না পারলে সবাইকে সরিয়ে দেব।’’
কর্মিসভা শেষে অনুব্রতর বক্তব্য, ‘‘যা দেখে গেলাম, আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকায় ন্যূনতম ৪০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকব। এত উন্নয়ন তো মানুষ আগে দেখেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy