আসানসোলের কুমারপুরে এই রেলেগেটে নিত্য সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র।
যৌথ উদ্যোগে অবশেষে খুলেছে সমাধানের রাস্তা। রেল এবং সেলের উদ্যোগে আসানসোলের কুমারপুরে জি টি রোডের উপরে ওভারব্রিজ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজ্য সরকারের নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট হাতে এলেই কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় জানান, তিনি ইতিমধ্যে এই সার্টিফিকেট পাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। মাস তিনেকের মধ্যে তা পাওয়া যাবে বলে তাঁর আশা। কাজ শুরুর ১৮ মাসের মধ্যে তৈরি হবে সেতু।
আসানসোলের কুমারপুরে জি টি রোডের উপর দিয়ে গিয়েছে পূর্ব রেলের লাইন। মূলত ইস্কো কারখানার পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য বহু বছর আগে এই লাইন পাতা হয়েছিল। মালগাড়ি যাতায়াতের জন্য এখানে দিনের অনেকটা সময় বেশ কিছুক্ষণ লেভেল ক্রসিং-এর গেট বন্ধ রাখতে হয়। ফলে, এই সময়ে শিল্পাঞ্চলের অন্যতম প্রধান রাস্তা এই জি টি রোডে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু’প্রান্তে বিশাল যানজট তৈরি হয়। নিত্যযাত্রী বোঝাই যানবাহন, স্কুলের পড়ুয়াদের গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স, এমনকী দমকলের গাড়িও আটকে থাকে। সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরাও। যানজটে আটকে ট্রেন ধরতে না পারার অভিজ্ঞতাও রয়েছে অনেকের। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিন এই রাস্তা দিয়ে লক্ষাধিক যানবাহন যাতায়াত করে। দীর্ঘক্ষণ লেভেল ক্রসিং বন্ধ থাকায় সমস্যা হয়। ওভারব্রিজ তৈরি হলে সেই সমস্যা মিটবে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শিল্পাঞ্চলবাসী অনেক দিন ধরে এখানে একটি ওভারব্রিজ তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু রেল বা রাজ্য সরকারের তরফে এর আগে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। অবশেষে সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুলের চেষ্টায় উদ্যোগী হয়েছে রেল এবং সেল। শনিবার দুই সংস্থার কর্তাদের একটি ‘মৌ’ সাক্ষর হয়। ছিলেন সাংসদ। পরে কুমারপুরে ওভারব্রিজের শিলান্যাসও করেন তিনি। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা ও সাত মিটার উচ্চতার এই ব্রিজ তৈরির প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে প্রায় তিরিশ কোটি টাকা। রেল এবং সেল কর্তৃপক্ষ নির্মাণের সমান অর্থ ব্যয় করবে।
সেল এগিয়ে এল কেন? সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইস্কো কারখানার আধুনিকীকরণ প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। কাঁচামাল বা উৎপাদিত পণ্য এই রেললাইন দিয়েই আমদানি-রফতানি করা হচ্ছে। তাই এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নের কথা ভেবে সাংসদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে তারা। বাবুল বলেন, ‘‘সাংসদ হওয়ার পরেই বাসিন্দারা আমাকে এই সমস্যার কথা জানান। অবশেষে এই কাজে হাত পড়ায় আমি খুশি।’’ আসানসোলের ডিআরএম এন কে সাচান এবং ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের সিইও আর কে রাঠী বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এই কাজে যোগ দিতে পেরে আমরা খুশি।’’ খুশি এলাকার বাসিন্দারাও। তবে কাজ শুরুর জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত তিন মাস। কারণ, রাজ্য সরকারের নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট না পাওয়া পর্যন্ত তা করা যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy