Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গতি বাড়বে ধান কেনায়, আশ্বাস মন্ত্রীর

গ্রামের চাষিদের একশ্রেণির লোকজন ধান বিক্রির টাকা পাওয়া নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছিল। সে কারণেই চেকে চাষিদের টাকা মেটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জানালেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

ধান পরীক্ষা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। শনিবার কালনায়। নিজস্ব চিত্র

ধান পরীক্ষা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। শনিবার কালনায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

গ্রামের চাষিদের একশ্রেণির লোকজন ধান বিক্রির টাকা পাওয়া নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছিল। সে কারণেই চেকে চাষিদের টাকা মেটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জানালেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

শনিবার মন্তেশ্বর ও কালনায় কিসানমান্ডিতে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার প্রক্রিয়া ঘুরে দেখেন খাদ্যমন্ত্রী। কী ভাবে ধান কেনা হচ্ছে, কী অসুবিধা রয়েছে, চাষিরা কত ধান বিক্রি করছেন, নথিপত্র খতিয়ে দেখেন তিনি। তার পরে বিক্রি করতে আসা ধানের মান পরীক্ষায় নামেন।

কালনার শিবিরে নান্দাই থেকে ধান নিয়ে এসেছিল একটি ট্রাক্টর। মন্ত্রী সেটির চালকের কাছে জানতে চান, চাষি কোথায়? চাষি এখনও সেখানে পৌঁছননি জেনে মন্ত্রী তখনই যেন সেই ধান না কেনা হয়, সেই নির্দেশ দেন। এর পরে কয়েকটি বস্তা থেকে ধান বার করে পরীক্ষা করেন তিনি। এক চালকলের প্রতিনিধিকে ডেকে নিয়ে মন্ত্রী জানান, এই ধানে আর্দ্রতা অনেক কম। তাই যেন বেশি বাদ না দেওয়া হয়। এই অভিযানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা ও কালনা ১ বিডিও দেবলীনা সর্দার।

মন্ত্রীর আশ্বাস, যত চাষি ধান বিক্রি করতে চাইবেন, সরকার তা কেনার চেষ্টা করবে। তিনি বলেন, ‘‘সে জন্য ৫২ লক্ষ টনের বদলে যদি ৭০ লক্ষ টন ধান কিনতে হয়, তাতে কোনও অসুবিধা নেই।’’ জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, ধান কেনার গতি বাড়াতে সমবায়গুলিকে সঙ্গে নিয়ে দু’হাজার শিবির খোলা হচ্ছে রাজ্যে। সেখানে কম্পিউটার জানা হাজার চারেক বেকারের কর্মসংস্থান হবে। কিসানমান্ডিগুলিতে এখন একটি কাউন্টার রয়েছে। তা বাড়িয়ে দু’টি থেকে তিনটি করা হচ্ছে। এখন যেখানে ২৫-৩০ জন চাষির ধান নেওয়া সম্ভব হচ্ছে, পরে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৫০-৬০ জনে। এ ছাড়াও প্রত্যন্ত গ্রামে ট্রাক নিয়ে গিয়ে ছোট-ছোট শিবির করে ধান কেনা হবে বলে জানান তিনি।

জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘আমরা ধান বিক্রির পরে এত দিন চাষিদের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতাম। কিন্তু গ্রামের সরল মানুষদের একশ্রেণির লোকজন ভুল বোঝাচ্ছিল। তাই ফের চেকের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলে ৫ জানুয়ারি থেকেই চেক দেওয়া শুরু করা হবে।’’

এ দিন খাদ্যমন্ত্রীকে কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু জানান, অনেক ছোট চাষির ২০-২৫ বস্তা ধান রয়েছে, অথচ তাঁরা অনেকে ৪৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করার টোকেন পাচ্ছেন। এর সুযোগ নিচ্ছে একশ্রেণির লোক। মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই সব চাষিরা আগে কয়েক বছরে কত ধান বিক্রি করেছেন, তা আমদের পোর্টালে নথিভুক্ত রয়েছে। অস্বাভাবিক কিছু মনে হলেই তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ইতিমধ্যে ফড়েদের নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। ৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সাড়ে চার হাজার কুইন্টাল ধান।

সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির টোকেন বিলি নিয়ে কালনায় বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রী জানান, পঞ্চায়েত বা কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নয়, চাষিরা ঠিক ভাবে ধান বিক্রি করতে পারছেন কি না তা দেখতে বলা হয়েছে বিডিওদের। পুলিশকেও কিসানমান্ডিতে নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Rice Food Minister Jyotipriya Mallick
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE