ভোটের দিন গুরুদায়িত্ব সামলেছেন তাঁরা। অথচ পোস্টাল ব্যালট হাতে না আসায় তাঁরাই এখনও ভোট দিতে পারেননি। কবে ভোট দিতে পারবেন, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। ২১ এপ্রিল ভোট মেটার পরে এখনও পর্যন্ত মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় আড়াইশো ভোটকর্মী ব্যালট হাতে পাননি বলে জানা গিয়েছে। কাটোয়ার দুই ভোটকর্মীও একই অভিযোগ তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে সরব বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ভোটকর্মী নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ভোটের কাজে গেলে ‘ইলেকশন ডিউটি সার্টিফিকেট’ পান। সেই শংসাপত্র দেখিয়ে তিনি যে বুথে রয়েছেন, সেখানেই ভোট দিতে পারেন। কিন্তু ভোটকর্মীরা অন্য কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে গেলে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক, গাড়ির চালক, পুলিশকর্মী সকলেই পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেন। অথচ দুর্গাপুর মহকুমার পরে এ বার মন্তেশ্বর ব্লকের অনেকেও সেই ব্যালট না পাওয়ার অভিযোগ তুলছেন।
মন্তেশ্বরের তারাশুসুনা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, তিনি ও তাঁর পরিচিত অন্তত জনা কুড়ি ভোটকর্মী এখনও পোস্টাল ব্যালট হাতে পাননি। উজনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমরেশ রায়ও বলেন, ‘‘বুঝতে পারছি না পোস্টাল ব্যালট পৌঁছতে এত দেরি কেন হচ্ছে। পরিচিত আরও সাত জন ব্যালট পাননি।’’ কাটোয়ার বাসিন্দা শ্যামলকুমার মজুমদার ও বিকাশচন্দ্র দাস নামে দুই ভোটকর্মীও বৃহস্পতিবার কাটোয়ার মহকুমাশাসকের কাছে পোস্টাল ব্যালট চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ভোটের প্রশিক্ষণের সময় নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন। তারপরেও পোস্টাল ব্যালট হাতে মেলেনি।
অতীতে পোস্টাল ব্যালটে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো, ঠিক সময়ে ব্যালট জমা না পড়ার মতো বিভিন্ন অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। সমস্যা সমাধানে ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন নির্দেশ পাঠায়, ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণের শেষ দিনেই দিনেই পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান পর্ব সেরে ফেলতে হবে। কিন্তু সেই নিয়ম এ বার পুরোপুরি মানা হয়নি বলে অভিযোগ ভোটকর্মীদের একাংশের। ভোটকর্মীরা এখনও হাতে পোস্টাল ব্যালট না পাওয়ায় সরব হয়েছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলি। সিপিএমের মেমারি ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক অশেষ কোনার বলেন, ‘‘কেন এখনও সব সরকারি কর্মীদের হাতে পোস্টাল ব্যালট পৌঁছায়নি তা নিয়ে খবর নেওয়া হচ্ছে।’’ মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সজল পাঁজাও বলেন, ‘‘কেন ব্যালট পৌছয়নি সে বিষয়ে মহকুমা প্রশাসনের কাছে খোঁজ নেব।’’
তবে কালনার মহকুমাশাসক শুভাশিস বেজ জানান, পোস্টাল ব্যালট ডাকঘরের মাধ্যমে পাঠানো হয়। কেউ এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত অভিযোগও করেননি বলে জানান তিনি। কাটোয়ার মহকুমাশাসক মৃদুল হালদারেরও আশ্বাস, কোথাও ত্রুটি রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy