ফের মাদক মেশানো চা খাইয়ে রোগীর পরিজনের সর্বস্ব লুটের অভিযোগ উঠল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। প্রতারণার শিকার জামালপুরের দুই ব্যক্তি। তাঁদের অভিযোগ, সঙ্গে থাকা টাকাকড়ি, মোবাইল খোয়া গিয়েছে।
সেপ্টেম্বরেই বাঁকুড়ার ইন্দাস ও বীরভূমের রাউতারা গ্রামের চার রোগীর পরিজনকে মাদক মেশানো চা খাইয়ে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিল বর্ধমান মেডিক্যালে। মাসখানেকের মধ্যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়েও। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহার যদিও দাবি, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রতারকের হদিস করা হচ্ছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ডে ভর্তি হন জামালপুরের পাঁচড়া গ্রামের কাজল বাগ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী লালু বাগ ও দাদা রামপ্রসাদ মল্লিক। রাতে ওই ওয়ার্ডের ১-২ ব্লকের সামনে প্রতীক্ষালয়ে বসেছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, সেখানেই আলাপ হয় বছর চল্লিশের এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি চাদর বিছিয়ে ঘুমের তোড়জোড় করছিলেন। লালু ও রামপ্রসাদের কাছে শোওয়ার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। তাঁদের দাবি, ওই ব্যক্তিই চাদরটা বড় করে পেতে তাঁদের বসার জন্য ডাকেন। কথাবার্তায় বেশ কিছুক্ষণ কাটার পরে পাশের দোকান থেকে চা কিনে খাওয়ান ওই ব্যক্তি। পরে লালু ও রামপ্রসাদও তাঁকে চা খাওয়ান। এরপরে তিন জনেই ঘুমিয়ে পড়েন। লালুর অভিযোগ, মাঝ রাতে ওই ব্যক্তি ফের তাঁদের ডেকে চা খেতে দেয়। চা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তাঁরা। সকালে হুঁশ ফিরলে দেখেন ব্যাগে ও পকেটে থাকা প্রায় তিন হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল উধাও। তন্নতন্ন করে খুঁজেও ওই ব্যক্তির দেখা পাননি তাঁরা। এরপরেই হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ করেন তাঁরা। দু’জনেই আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মাসখানেক আগেও রাধারানি ওয়ার্ডের পিছনের শেডে একই ভাবে প্রতারিত হয়েছিলেন বাঁকুড়ি, বীরভূমের চার জন। ইন্দাসের সুভাষ সোরেন, ক্রান্তি বাস্কে এবং রাউতারার রাহুল বাগদী ও আনন্দ বাগদীর অভিযোগ ছিল, মাঝবয়েসী এক ব্যক্তি রোগীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে গল্প জোড়েন তাঁদের সঙ্গে। বৃষ্টি পড়ায় ওই শেডে বসেছিলেন তাঁরা। পরে পাশের একটি বিক্রেতার থেকে চা কিনে খাওয়ান ওই ব্যক্তি। এরপেরই জ্ঞান হারান তাঁরা। তাঁদেরও মোবাইল ও নগদ টাকা খোওয়া গিয়েছিল।
এ দিনের ঘটনার পরে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। সন্ধ্যা মালিক, রীতা মালিকদের দাবি, ‘‘সামনে পুলিশ, গার্ড রয়েছে। তার মধ্যেও এ ভাবে হাসপাতাল চত্বরে গরিব মানুষদের প্রতারণা করা হলে, কোন ভরসায় চিকিৎসা করাতে আসব।’’
ডেপুটি সুপারের দাবি, বারবার নানা ভাবে ঘোষণা করে এ সব নিয়ে সচেতন করা হয়। তার পরেও মানুষ ফাঁদে পা দিচ্ছেন। সচেতন না হলে প্রতারণা আটকানো মুশকিল বলেও তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy