দুর্গাপুের পদযাত্রা। নিজস্ব চিত্র
‘মন কি বাত’ এর পাল্টা ‘আসলি বাত’। সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মতামত জানতে প্রশ্নপত্র নিয়ে দুর্গাপুরে বাড়ি-বাড়ি ঘুরছেন সিপিএম কর্মীরা। শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট ৪৫ কিলোমিটার পদযাত্রার মাধ্যমে দুর্গাপুরের ছ’টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা।
এই কর্মসূচির আয়োজক সিপিএমের দুর্গাপুর পূর্ব ২ এরিয়া কমিটি সূত্রে জানা যায়, পুরসভার ২৮, ২৯, ৩০, ৪০, ৪১ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৩৫ হাজার বাড়িতে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন দলীয় কর্মীরা। সংবিধানের মূল ভাবনাগুলি রক্ষা করা এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপরে আঘাত বন্ধের দাবিতে মিছিল যাচ্ছে পাড়ায়-পাড়ায়। মানুষের কাছে ১২টি প্রশ্নের পত্র দিয়ে জবাব চাইছেন কর্মীরা।
সিপিএম নেতারা জানান, বাংলা ও হিন্দি, দুই ভাষায় প্রশ্নপত্র ছাপা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা এসেছে কি না, পেট্রোপণ্যের দাম, বার্ধক্যভাতা-প্রতিবন্ধী ভাতা-বিধবা ভাতা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মন্দির-মসজিদ, জিনিসপত্রের দাম কমানো, মহিলাদের নিরাপত্তা, শিল্প ও চাকুরি— এ সবের মধ্যে ক্রমানুসারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বেছে নিতেও বলা হয়েছে। পুরভোটে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুরক্ষিত ছিল কি না, গত সাত বছরে নতুন কোনও শিল্প হয়েছে কি না, এ সব প্রশ্নও রাখা হয়েছে।
পদযাত্রা শুরু হয়েছে শনিবার থেকে। এরিয়া কমিটির সম্পাদক সিদ্ধার্থ বসুর নেতৃত্বে মূল পদযাত্রায় হাঁটছেন ৬৮ জন। তাঁদের সঙ্গে নানা সময়ে যোগ দিচ্ছেন অন্য কর্মী-সমর্থকেরা। দলের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায়সরকার বলেন, ‘‘সংবিধান চালুর পরে কেটে গিয়েছে ৬৮ বছর। অথচ, এক শ্রেণির রাজনৈতিক দলের হাতে সংবিধান আজ বিপন্ন। দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে জন্যই ৬৮ জনকে নিয়ে মূল মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।’’ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘‘সংবিধান প্রণেতা বিআর অম্বেডকরের ভাবনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ইতিহাস, সংস্কৃতি, বহুত্ববাদী ধারণা আজ সংকটের মুখে। মানুষের কাছে ‘আসলি বাত’ শুনতে বেরিয়েছি আমরা।’’
এই মিছিলের সামনে রয়েছে বিআর অম্বেডকরের ছবি। যা নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘অম্বেডকর, বিবেকানন্দ, ক্ষুদিরামকে নিক। শ্যামাপ্রসাদকেও নিয়ে নিক। কিন্তু এ সব করে কিছু হবে না। সময়ের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন কমিউনিস্টরা।’’ তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়েরও প্রতিক্রিয়া, ‘‘পরপর নির্বাচনের ফলেই পরিষ্কার, মানুষ সিপিএমকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ সব করে লাভ হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy