২৬ হাজারের উপরে আবেদনকারীর পাকা বাড়ি রয়েছে। —প্রতীকী ছবি।
আবাস যোজনা প্রকল্পে রবিবার বিকেল পর্যন্ত ১৯% আবেদনকারীকে ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ। দু’বছর আগে ঝাড়াইবাছাই করে একটা ‘স্থায়ী তালিকা’ বা পিডব্লুএল (পারমানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট) তৈরি করেছিলেন আধিকারিকেরা। তার পরেও একটা বড় অংশের আবেদনকারীদের পাকা বাড়ি থাকায় বর্তমান সমীক্ষায় বাদ পড়েছেন। বিরোধীদের দাবি, তালিকায় ‘জল’ ছিল বোঝাই যাচ্ছে। অনেকে তৃণমূলের মদতে পাকা বাড়ি থাকার পরেও আবেদন করেছিলেন, সেটাও স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার ‘বাংলা আবাস যোজনা’ প্রকল্প খতিয়ে দেখতে জেলায় আসছেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও পঞ্চায়েত সচিব পি উগলনাথন।
২০২২ সালের নভেম্বরে রাজ্যের প্রায় ১১ লক্ষ উপভোক্তা সম্বলিত তালিকা অনুমোদন করে কেন্দ্র। তার পরেও গত প্রায় দু’বছর ধরে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে এই প্রকল্পে। আধিকারিকদের একাংশ জানান, ২০ ডিসেম্বর থেকে আবাসের উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির টাকা রাজ্য সরকার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। তার পরেই গত মাস থেকে স্থায়ী তালিকা ছাড়াও বিভিন্ন স্তরে বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদকারীদের পরিস্থিতি যাচাই করতে শুরু করেছেন সমীক্ষকরা।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ১,৮৪,৫২৮ জনের বাড়িকে সমীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ (পিএমএওইয়া-জি) প্রকল্পে অনুমোদিত তালিকায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৫৫,৬০৯ জনের নাম ছিল। সেই বাড়িগুলির সঙ্গে ওই প্রকল্পে স্থায়ী তালিকায় নথিভুক্ত আরও ৭৩,৫৫৩টি বাড়ি যাচাই করছেন পরিদর্শকেরা। এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় (সিএমআরও), সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে (এসএসএম) বাড়ি চেয়ে আবেদন করেছিলেন যাঁরা, তাঁদের বাড়ির সঙ্গে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়িও যাচাই করা হচ্ছে।
সমীক্ষকদের দাবি, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের চুপি গ্রামে একটি ঘটনা ছাড়া জেলায় বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে কোনও অশান্তির মুখে তাঁদের পড়তে হয়নি। জেলা প্রশাসনের দাবি, চুপি গ্রামের বিক্ষোভকারীরা বাড়ি পাওয়ার জন্য ঠিক পদ্ধতিতে আবেদন করেননি। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, বাড়ি পাওয়ার জন্য যে যোগ্যতা প্রয়োজন, বিক্ষোভকারীদের তাতে উত্তীর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। অথচ গ্রামবাসীর দাবি, যে তালিকা ধরে সমীক্ষা হচ্ছে, তাতে অনেকেরই নাম থাকা অনুচিত। জেলা প্রশাসনের সমীক্ষাও তাই বলছে।
শনিবার পর্যন্ত জেলায় ১,৪৭,৮১৪টি (তালিকার ৮০%) বাড়ির সমীক্ষা শেষ করেছেন সমীক্ষকেরা। তার মধ্যে ১,১২,২৬৯টি (৭৬%) বাড়িকে আপাত ভাবে ‘যোগ্য’ বলে তাঁরা মনে করেছেন। আর ২৬,৪০৪টি (১৮%) বাড়িকে ‘অযোগ্য’ বলে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। রবিবার বিকেলে ‘অযোগ্য’ বলে আরও ১% বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে। আর ৬% আবেদনকারী ‘ভূমিহীন’।
প্রশাসনের দাবি, বাদ যাওয়া ২৬,৬০৪টি বাড়ির মধ্যে ২৬ হাজারের উপরে আবেদনকারীর পাকা বাড়ি রয়েছে। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বেশি নাম বাদ যাচ্ছে কাটোয়া ২, পূর্বস্থলী ১, পূর্বস্থলী ২, আউশগ্রাম ১ ব্লক থেকে। কম নাম বাদ যাবে আউশগ্রাম ২, মেমারি ১, খণ্ডঘোষ ও মন্তেশ্বরে।
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “যে তালিকা ধরে সমীক্ষা হচ্ছে, সেটাই ভুয়ো।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষেরও অভিযোগ, “ওই তালিকা তৃণমূল-প্রভাবিত, তার যথেষ্ট প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে।”
যদিও তৃণমূলের জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলামের পাল্টা, “রাজ্য সরকার ১০০ দিনের পর গরিব মানুষদের বাড়ি তৈরি করতেও এগিয়ে এসেছে। সহ্য হচ্ছে না বিরোধীদের। সে জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy