প্রতীকী ছবি
দলে-দলে পরিযায়ী শ্রমিকেরা নিজেদের এলাকায় ফিরছেন। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাতের মতো যে সব রাজ্যে করোনা-সংক্রমণের সংখ্যা বেশি, সেখান থেকে আসা শ্রমিকদের নিভৃতবাস কেন্দ্রে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে নিভৃতবাস কেন্দ্র করার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। ওই পাঁচ রাজ্য ছাড়া অন্য জায়গা থেকে আসা শ্রমিকদের বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দু’টি ক্ষেত্রেই এলাকাবাসীর একাংশের ‘বাধা’র মুখে পড়তে হচ্ছে বলে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের সাহায্যে সমস্যা মেটাতে হচ্ছে প্রশাসনিক কর্তাদের।
বর্ধমান শহরের দু’টি জায়গায় স্থানীয় স্কুলে নিভৃতবাস কেন্দ্র তৈরি করা যাবে না বলে এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একটি জায়গায় রীতিমতো মাইকে করে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। একই রকম ছবি উঠে আসছে মেমারি-সহ বেশ কিছু এলাকায়। আবার কাটোয়া, পূর্বস্থলী, জামালপুর, ভাতারের মতো নানা জায়গায় দলবেঁধে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ঢুকতে গেলে কিছু বাসিন্দা বাধা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ওই শ্রমিকদের জন্য কোনও গ্রামে প্রাথমিক স্কুল, কোথাও মাধ্যমিক স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরতে শুরু করার পরে গত এক সপ্তাহে জেলায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। তবে গত দু’দিন ধরে লালারসের নমুনা সংগ্রহ অনেকটা কমানো হয়েছে। ঠিক হয়েছে, প্রতিদিন ৩০০ জনের নমুনা সংগ্রহ হবে। পরীক্ষাও তুলনামূলক কমে যাওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, পরিযায়ীদের নিয়ে সরকার দু’রকম নির্দেশিকা জারি করেছে— পাঁচটি রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের জন্য এক রকম এবং বাকিদের জন্য অন্য রকম। এই দু’রকম নির্দেশের কারণেই এলাকাবাসীর মধ্যে বিভ্রান্তি বেড়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মীদের একাংশ। পাঁচটি রাজ্য ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকেরাও তাই বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়ছেন বলে তাঁদের দাবি। ফলে, স্কুল খুলে নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ, ব্লক প্রশাসন এবং ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা নিয়মিত কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, খুব প্রয়োজন ছাড়া জনবসতি বা গ্রামের মধ্যবর্তী জায়গায় নিভৃতবাস কেন্দ্র না গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলাশাসক জানান, এলাকাবাসীর আপত্তি থাকলে নিভৃতবাস কেন্দ্র সরানো নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে স্থানীয় প্রশাসন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাসিন্দাদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। গ্রামে-গ্রামে সচেতনতা শিবির করার সিদ্ধান্তও নিতে চলেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার সন্ধ্যায় এক ভিডিয়ো কনাফেরেন্সে জেলা প্রশাসনের তরফে ব্লকের আধিকারিকদের বার্তা দেওয়া হয়েছে, বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকলে ক্ষতি নেই, পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামবাসীকে সে কথা বোঝাতে হবে। যাঁরা বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকবেন, তাঁদের উপরে কড়া নজরদারি চলবে।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রয়োজনের ভিত্তিতে নিভৃতবাস কেন্দ্র গড়তে হবে। কোনও সমস্যা হলে স্থানীয় প্রশাসন তা দেখবে। আমাদের জেলায় বড় কোনও সমস্যা হয়নি। যেখানে ছোটখাটো সমস্যা হয়েছে, বিডিও-ওসিরা গিয়ে মিটিয়ে দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy