সাঁইবাড়ি-কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল আয়োজিত সভা। মঙ্গলবার দুপুরে। নিজস্ব চিত্র
বারবার জমায়েত এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও সভা-সমাবেশের বিরাম নেই। আয়োজন হচ্ছে মেলারও।
বর্ধমানের সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের ৫০ বছর পূর্তিতে ছোটখাট সভা হল মঙ্গলবার বিকেলে। উদ্যোক্তা তৃণমূল। শহরের প্রতাপেশ্বর শিবতলা লেনে সাঁইবাড়ির সামনে ওই সভার জন্য কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ সূত্রের দাবি, সেখানে ভিড় করেছিলেন শ’খানেক লোক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোবাইলের মাধ্যমে স্মৃতিফলক তৈরির পরামর্শ দেন। সভা শেষে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘জমায়েত কিছু হয়নি। জমায়েত হলে, বিশাল মিছিল হত। সাধারণ মানুষ নিজে থেকে এসেছিলেন।’’
১৯৭০ সালের ১৭ মার্চ খুন হয়েছিলেন দুই ভাই মলয় সাঁই ও প্রণব সাঁই। তাঁদের ছোট ভাইকে পড়াতে এসে ওই বাড়িতেই নিহত হন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণ পদকপ্রাপ্ত ছাত্র, মঙ্গলকোটের বাসিন্দা জিতেন রায়। সে প্রসঙ্গে তুলে সভায় মুখ্যমন্ত্রী মোবাইলে বলেন, ‘‘সাঁইবাড়ির হত্যাকাণ্ড ৫০ বছর হল। আমাদের কাছে খুবই মর্মাহত হওয়ার মতো ওই ঘটনা। পঞ্চাশ বছর পরেও মানুষ মনে রেখে দিয়েছেন।’’ এর পরেই তিনি স্মৃতিফলক তৈরির পরামর্শ দেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে স্মৃতিফলক তৈরি করা হবে।“
এ দিন কালনার শাসপুরে রমরমিয়ে অনুষ্ঠিত হল শীতলা পুজোর মেলা। কয়েক হাজার ভক্ত লাইনে দাঁড়িয়ে পুজো দেন, মেলা প্রাঙ্গণে জড়ো হন। এ দিন দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মন্দির থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূর থেকে ভক্তদের লাইন পড়েছে। দুপুরে ভিড় আরও বাড়তে থাকে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পুজোর পরে, মন্দির লাগোয়া জায়গায় একত্রিত হয়ে খাবার খাওয়ার রেওয়াজ বহু পুরানো। এ দিনও তা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে কোনও সতর্কতা চোখে পড়েনি। মেলা কমিটির তরফে কোনও প্রচার ছিল না। এমন ভিড়ে তো সংক্রমণ ছড়াতে পারে? এমন প্রশ্ন অবশ্য আমল দিতে চাননি মেলায় আসা মানুষজন। মেলা প্রাঙ্গণে শিবির করেছে বিভিন্ন দল। শাসকদলের নেতা সন্দীপ বসু দাবি করেন, ‘‘আমরা ভক্তদের করোনা সম্বন্ধে সচেতন করেছি।’’ মেলার আয়োজকদের তরফে অমর দাসের বক্তব্য, ‘‘প্রশাসনের তরফে এ ব্যাপারে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তাই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ তাঁর দাবি, অন্য বছরের তুলনায় ভক্তসমাগম এ বার কম।
দুপুরে শাসপুরের পরিস্থিতি জানার পরে মেলা কমিটির লোকজনকে ডেকে পাঠান মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তি। দু’জন ম্যাজিস্ট্রেটকে মেলায় সতর্কতামূলক প্রচারের নির্দেশ দেন। মহকুমাশাসক জানান, মেলার অনুমতি মহকুমা প্রশাসন দেয়নি। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি জানান, স্টেশন, ফেরিঘাট, বাসস্ট্যান্ড, বাজার-সহ নানা জায়গায় সচেতনতা প্রচার চালানো হয়েছে।
এরই মধ্যে কাটোয়া কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি আলোচনসভা বাতিল করেছে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬ ও ১৭ এপ্রিল ধর্মশাস্ত্রের উপরে একটি আলোচনসভা হওয়ার কথা ছিল। সেখানে জার্মানি, বাংলাদেশের মতো দেশ ছাড়াও দিল্লি, মহারাষ্ট্র-সহ নানা রাজ্য থেকে অতিথিদের আসার কথা। কিন্তু করোনাভাইরাসের জন্য সে সভা বাতিল করা হচ্ছে। অতিথিদের তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বুঝে সভা বাতিল করা হচ্ছে। তা পরে আয়োজন করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy