উখড়ার মেলা প্রাঙ্গণে। নিজস্ব চিত্র।
শিল্প প্রদর্শনী, সংস্কৃতির আসর, সার্কাস— সব কিছুই থাকে এই মেলায়। উখড়ার প্রায় তিনশো বছরের পুরনো ঝুলনমেলায় এ সব কিছু দেখতে ভিড় জমান সাধারণ বাসিন্দারাও।
এলাকার পুরনো বাসিন্দারা জানান, উখড়ার জমিদার বাড়ি হান্ডা পরিবারের উদ্যোগে মেলা শুরু হয়। এখনও বজায় রয়েছে পারিবারিক ঐতিহ্য। রাখি পুর্ণিমার একাদশীর দিন থেকে পাঁচ দিন জমিদার বাড়ির গোপীনাথ, বৃন্দাবনচন্দ্রজী ও গোপাল মন্দিরে দেব মূর্তিগুলিকে বিভিন্ন ভাবে সাজানো হয়। তুলসী, নৌকা বিলাস, হস্তি আরোহী, অশ্বারোহী ও রাজবেশ— এই পাঁচ ভাবে দেব মূর্তিগুলি সাজানো হয়। জমিদার বাড়ির সদস্য শোভনলাল সিংহ হান্ডা জানান, আগে গোটা গ্রাম জুড়েই মেলা বসত। ১৯৭৫ সালে সার্কাস মাঠে মোট ৩টি সার্কাস বসত। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জনপদ বাড়তে থাকায় ফাঁকা জায়গা কমে যায়। এর জেরে এখন একটিই সার্কাস দল আসে ফি বছর। এখন মেলা বসে প্রধানত সার্কাস ও ফুটবল ময়দানে। আগে মেলা পরিচালনা করত জমিদার বাড়ি। ১৯৮৩ সালের পর থেকে উখড়া পঞ্চায়েত মেলা কমিটি তৈরি করে। তারপর থেকে পঞ্চায়েত প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকেরা মেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত থাকে।
বছর কুড়ি আগে নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে এলাকার বিভিন্ন শিল্পীদের নিয়ে ৩ দিনের শিল্প প্রদশর্নী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। মেলার তৃতীয় দিন থেকে রাখি পুর্ণিমার দিন পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলে। শেষ দিন রাতভর বাউল ও লোকসঙ্গীতের আসরে উপচে পড়ে শ্রোতাদের ভিড়। এলাকার বাসিন্দা লেখক সার্থক ঘোষ, রামায়ণ সাউ, খুরশিদ আলমরা বলেন, ‘‘বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শিল্প প্রদর্শনী এলাকার শিল্পীদের জন্য নিজেদের প্রতিভাকে তুলে ধরার সুযোগ এনে দেয়।’’ মেলা খাতায়-কলমে পাঁচ দিনের হলেও আসলে চলে প্রায় ১০ দিন ধরে। মেলার বিক্রি নিয়ে খুশি দোকানিরাও। তাঁদের কথায়, ‘‘ব্যবসার ভাল পরিবেশের জন্য প্রতি বছরই মেলায় আসি।’’
এ বার মেলা উদ্বোধন করেন স্থানীয় বিধায়ক সোহরাব আলি। হরিপুর, নবগ্রাম, বৈদ্যনাথপুর, খান্দরা থেকেও মানুষ মেলায় আসছেন বলে জানান উদ্যোক্তারা। তবে অন্ডাল-উখড়া রুটে মিনি বাস ধর্মঘট শনিবার ১৪ দিনে পা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মেলায় আসা মানুষজন। দীর্ঘনালা গ্রামের শান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিবারই মেলার জন্য বিশেষ বাস চালানো হয়। কিন্তু এ বার ধর্মঘট চলায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ট্রেকারে করে মেলায় আসতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy