পুলিশের রুজু করা মামলায় ধারা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় গলসি থেকে চোলাই কারবারে জড়িত অভিযোগে ধরা পড়া ১২ জন জামিন পেলেন আদালতে। তবে গলসির চোলাই-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত তথা ঠেকের মালিক আন্না বাউড়ি জামিন পাননি। বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতের সিজেএম এজলাসের বিচারক সঞ্জয়রঞ্জন পাল আন্নাকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
চোলাই পান করার পরে অসুস্থ হয়ে সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত গলসির করকনা-রামগোপালপুরের আট জন মারা গিয়েছেন। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার রাতভর অভিযান চালিয়ে চোলাই তৈরিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে গলসি থানার পুলিশ ১২ জনকে ধরে। পুলিশের দাবি, ধৃতদের কাছ থেকে ৩৫৫ লিটার চোলাই উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হলে ধৃতদের আইনজীবীরা দাবি করেন, পুলিশ তাঁদের মক্কেলদের বিরুদ্ধে মামলায় ‘বেঙ্গল এক্সাইজ অ্যাক্ট’-এর ৪৬-এ (সি-২) ধারা প্রয়োগের কথা উল্লেখ করেছে। অথচ, ওই রকম কোনও ধারা নেই। একাধিক নথিতে সেই উল্লেখ থাকায় ধৃতদের শর্তাধীন জামিন দেন সিজেএম।
সরকারি কৌঁসুলি চন্দ্রনাথ গোস্বামী বলেন, “ওই রকম উল্লেখ কেন করা হল, তার ব্যাখ্যা নেই আমার কাছে। গলসির ওসিকে এ ধরনের ভুল থেকে সতর্ক থাকার জন্য বলেছি।” যদিও গলসির ওসি রাকেশ সিংহের দাবি, “ঠিক ধারা প্রয়োগ করেই ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।” ডিএসপি (অপরাধ) সিঞ্চন রায়চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।”
ঘটনা হল, বুধবার রাতে রায়না থানার পুলিশও হরিপুর বাসস্টপ থেকে ১০০ লিটার মদ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে। তবে আদালতে হাজির করানোর পরে বিচারক ধৃতদের চার দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আন্না বাউড়িকে আদালতে হাজির করে সঙ্গে জমা দেওয়া রিপোর্টে পুলিশ দাবি করেছে, চোলাইয়ের সঙ্গে দেশি মদ মিশিয়ে বিক্রি করত আন্না। রবিবার সেই মিশেলের গোলমাল থেকেই বিপত্তি ঘটে থাকতে পারে বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা। আন্নার বাড়ি তল্লাশি করে নেশাবর্ধক ছ’টি ট্যাবলেট ও একটি ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জও মিলেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। সে চোলাইয়ে ওই ট্যাবলেট মিশিয়ে নেশা বাড়াত কি না, তা জানার জন্যই ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন বলে আদালতে আবেদন করেছিল পুলিশ। আন্নার হয়ে কোনও আইনজীবী সওয়াল করেননি। সরকারি কৌঁসুলি ও তদন্তকারী অফিসারের বক্তব্য শুনে আন্নাকে পুলিশ হেফাজতে পাঠান বিচারক।
বেআইনি মদ বিক্রির অভিযোগে বর্ধমান শহর, জামালপুর, পালশিট ও পাল্লা রোড থেকে ১০ জনকে ধরেছে আবগারি দফতর। ২৫০ লিটার মদও উদ্ধার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy