খুনের ঘটনায় নাম জড়ালেও পুলিশ তাদের নাগাল পায়নি। কিন্তু সোমবার রাতে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) বহু টাকার নতুন নোট ও অস্ত্রশস্ত্র-সহ যে সাত জনকে গ্রেফতার করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে শেখ আমিন হত্যায় অভিযুক্ত দুই কয়লা কারবারিও। তা জানার পরেই তদন্তে অগ্রগতির আশা দেখছে আমিনের পরিবার। পুলিশ জানায়, ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও লোকেশ সিংহকে কবে ফরিদপুরে নিয়ে এসে জেরা করা যাবে তা এসটিএফের তদন্তের গতিপ্রকৃতির উপরে নির্ভর করছে।
দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়লা মাফিয়াদের দাপট দীর্ঘ দিনের। বেশ কয়েক বছর বেআইনি এই কারবারের নেতৃত্বে থাকার পরে কৈলাসপুরের শেখ সেলিমকে সরিয়ে উত্থান হয় তাঁরই ঘনিষ্ঠ শেখ আমিনের। সেলিম-আমিনের দলবলের মধ্যে এলাকা দখলে প্রায়ই সংঘর্ষ বাধত। খুন-পাল্টা খুন লেগেই ছিল। সেলিম এবং আমিন নানা সময়ে গ্রেফতার হয়ে জেলে যায়।
২০১২ সালের অক্টোবরে বাড়ির কাছে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন সেলিম। সেই খুনের ষড়যন্ত্রে নাম জড়ায় আমিনের। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত জেলে ছিলেন তিনি। তার পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফিরলেও কয়লা কারবারে তাঁর কর্তৃত্ব কমছিল বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর। সে সবের রাশ নিয়ে নিয়েছিল এক সময়ে আমিনেরই অনুগামী শেখ শাজাহান। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইদের সকালে নমাজ শেষে ইদগাহের সামনেই গুলিতে খুন হন আমিন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেল থেকে বেরিয়ে আমিন নিজের কয়লার ডিপো খোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু শাজাহানের লোকজন পুলিশে খবর দিয়ে ডিপো বন্ধ করিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশের কড়াকড়িতে জাতীয় সড়ক দিয়ে অবৈধ কয়লা পাচার বন্ধ থাকায় পাণ্ডবেশ্বর, ফরিদপুর, কাঁকসা হয়ে ছোট গাড়ি বা সাইকেলে করে কয়লা পাচারের নতুন রুট গড়ে উঠেছিল। অভিযোগ, আমিন সেই রুটে কয়লা পরিবহণে বাধা দিতে থাকেন। আর তাতে শুধু শাজাহান নয়, সমস্যায় পড়ে যায় দুর্গাপুরের পার্থ চট্টোপাধ্যায়, লোকেশ সিংহেরা। পুলিশের নানা সূত্রের দাবি, দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকায় কয়লা পাচারের রাশ ইদানীং পার্থ, লোকেশরা নিয়ন্ত্রণ করছিল। কিন্তু আমিনের বাধায় ডিপোয় কয়লা পৌঁছতে সমস্যা হচ্ছিল। এর পরে শাজাহানের এক অনুগামীর বিরুদ্ধে বেআইনি মোরাম খাদান চালানোর অভিযোগ ওঠে। তার পিছনেও আমিনের হাত ছিল বলে সন্দেহ করে করে শাজাহানের দলবল।
আমিনের পরিবারের অভিযোগ, এই সব কারণেই পার্থ, লোকেশ ও শাজাহানরা আমিনকে খুনের ছক কষে। পার্থ, লোকেশ ও সরিফুল নামে এক জন খুনের সুপারির টাকা দেয়। পুলিশ আগেই শাজাহান-সহ মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করেছিল। এ বার পার্থ ও লোকেশ ধরা পড়েছে। পুলিশ জানায়, সরিফুলের খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy