Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
বন্ধ কালনার ৩ নার্সিংহোম

লাইসেন্সের মেয়াদ শেষেও তোয়াক্কা নেই

নার্সিংহোম নিয়ে অভিযোগ ছিলই। তবে দীর্ঘদিন প্রশাসনিক নজরদারি না হওয়ায় তা সামনে আসেনি। মঙ্গলবার কর্তারা মাঠে নামতেই নজরে এল নথিপত্রে গোলমাল থেকে মেয়াদ পেরোনো অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র সবই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৩১
Share: Save:

নার্সিংহোম নিয়ে অভিযোগ ছিলই। তবে দীর্ঘদিন প্রশাসনিক নজরদারি না হওয়ায় তা সামনে আসেনি। মঙ্গলবার কর্তারা মাঠে নামতেই নজরে এল নথিপত্রে গোলমাল থেকে মেয়াদ পেরোনো অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র সবই। স্বাভাবিক ভাবেই কালনা শহরের নার্সিংহোমগুলিতে রোগীদের নিরাপত্তা, চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়েও।

কালনা শহর ও তার আশপাশে ১০টি নার্সিংহোম রয়েছে। কয়েকটিতে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় রোগীদের পরিষেবাও দেওয়া হয়। সম্প্রতি নার্সিংহোমগুলি নিয়ে নানা অসঙ্গতি কানে আসে কালনার মহকুমাশাসক নিতীন সিংহানিয়ার। পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার বিকেলে এসিএমওএইচকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানে নামেন তিনি। বৈদ্যপুর এলাকার তিনটি নার্সিংহোমে ঘুরে একাধিক গাফিলতির খোঁজ মেলে। নার্সিংহোমের এক কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়। বুধবার মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘নিয়ম ভাঙার অজস্র নজির মিলেছে তিনটি নার্সিংহোমেই। ওই নার্সিংহোমগুলি সিল করে দেওয়া হচ্ছে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন করে আর রোগী ভর্তি না করতে।’’ নির্দেশ অমান্য করে রোগী ভর্তি করলে পুলিশ নার্সিংহোম মালিককে গ্রেফতার করবে বলেও জানান তিনি।

বৈদ্যপুরের একটি নার্সিংহোম দিয়ে অভিযান শুরু হয়। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গিয়ে দেখা যায় ছোট ছোট ঘিঞ্জি ঘরে ১০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। বেশির ভাগই প্রসূতী। তবে কোনও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। রোগী দেখছিলেন নার্স এবং আয়ারা। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কোনও রেজিস্টার দেখাতে পারেননি। কয়েকটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও তিন বছর আগে তার মেয়াদ ফুরিয়েছে দেখা যায়। খোলা জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায় প্রচুর ব্যবহৃত সিরিঞ্জ। সেগুলি নষ্ট করা হয়নি কেন, জানতে চাইলে উত্তর দিতে পারেননি কোনও কর্মীই।

বৈদ্যপুর মোড় লাগোয়া আর একটি নার্সিংহোমও নথিপত্র দেখাতে পারেনি। এরপরে হাসপাতাল লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে অভিযান চালান মহকুমাশাসক। সেখানে কর্তৃপক্ষ যে লাইসেন্স দেখান, তার মেয়াদ ফুরিয়েছে ২০১৪ সালে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী একটি শয্যা থেকে অন্য শয্যার দূরত্ব থাকার কথা ৬৫ স্কোয়ার ফুট। তিনটি নার্সিংহোমের কোনওটিতেই এই নিয়ম মানতে দেখা যায়নি।’’

এ ছাড়াও রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার পরিষেবা নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন জানতে পেরেছে, পরিষেবার নাম করে অনেকের কার্ড থেকে বেশি টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। একটি নার্সিংহোম থেকে পাঁচ বছরের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, ওই তথ্য ধরে দেখা হবে যে অপারেশনের জন্য রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছিল সে অপারেশন হয়েছে কি না। পরের অভিযানে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থবিমা যোজনার উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও জানান মহকুমাশাসক।

অন্য বিষয়গুলি:

Nursing home licence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE