Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

নার্সদের কোল ছেড়ে হোমে

মাস তিনেক আগে কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের বুলবুলিতলা বাজারের কাছে ফাঁকা জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই সদ্যোজাতকে। পিঁপড়ে, পোকামাকড়ের কামড়ে শরীরে তখন বেশ কয়েকটা ক্ষত।

হোমে যাওয়ার আগে। নিজস্ব চিত্র।

হোমে যাওয়ার আগে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

প্রায় তিন মাস হাসপাতালে ছিল শিশুটি। নার্স-ডাক্তারদের কোলে, প্রসূতীদের স্নেহে বেড়ে উঠছিল। মাঝে এক মহিলা নিজেকে ওই শিশুপুত্রের মা দাবি করে হাসপাতালে বেশ কয়েক বার আর্জিও জানান। তবে শেষ পর্যন্ত কোনও নথি দেখাতে পারেননি তিনি। সোমবার চেনা কোল ছেড়ে সরকারি হোমে গেল ওই শিশু, সাত্ত্বিক।

হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘এসএনসিইউ-য়ের নার্স, কর্মীরাই ওকে আগলে রাখত।’’

মাস তিনেক আগে কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের বুলবুলিতলা বাজারের কাছে ফাঁকা জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই সদ্যোজাতকে। পিঁপড়ে, পোকামাকড়ের কামড়ে শরীরে তখন বেশ কয়েকটা ক্ষত। স্থানীয় বাসিন্দারাই আটঘরিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করান শিশুটিকে। শরীরে সংক্রমণ দেখা দেওয়াই ৭ জুন মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তারপর থেকে শিশুটির ঘর হয় এসএনসিইউ। সেখানকার নার্সরাই নাম রাখেন সাত্ত্বিক। শিশুটিকে খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো থেকে কাজের মাঝে কোলে নিয়ে ঘোরা সব কাজই করতেন নার্সরা। এর মাঝেই বিলকিস বিবি নামে এক মহিলা সাত্ত্বিককে নিজের সন্তান দাবি করে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসককে চিঠি দেন। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরর দাবি, ওই মহিলা জন্ম শংসাপত্র, পোলিওর কার্ড বা অন্য কোনও প্রমাণই দেখাতে পারেননি।

সম্প্রতি শিশুটি সুস্থ হওয়ার পরে তাকে হোমে পাঠানোর জন্য মহকুমাশাসককে চিঠি দেন সুপার। সোমবার জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির তিন প্রতিনিধি হাসপাতালে যান। চোখের জলে সাত্ত্বিককে তাদের হাতে তুলে দেন নার্সরা। জানা গিয়েছে, শিশুটিকে তালিত বা দুর্গাপুরের হোমে রাখা হবে। এসএনসিইউ বিভাগের নার্সিং ইনচার্জ শিপ্রা শেঠ বলেন, ‘‘অনেক দিন কাছে ছিল তো, কষ্ট হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Abandoned baby কালনা Kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE