গোয়ালাপাড়ার এই জলাশয় নিয়েই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র।
সকাল থেকে সন্ধ্যা, শীতকালে পরিযায়ী পাখিদের ডাকে মুখরিত হত এলাকা। পরিযায়ী পাখিদের দেখতে আশপাশের এলাকা থেকেও বহু মানুষ আসতেন। অনেকে লেন্সবন্দি করতেন পাখিদের। কিন্তু এই সবই গত দু’বছর ধরে অতীত কাঁকসার মলানদিঘি পঞ্চায়েতের রক্ষিতপুর গ্রামের গোয়ালাপাড়ায়। এলাকাবাসী জানান, যে জলাশয়কে ঘিরে এলাকায় পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা লেগে থাকত, এখন সেটির কার্যত
অস্তিত্বই নেই।
গোয়ালাপাড়ার একেবারে শেষ প্রান্তে রয়েছে জলাশয়টি। প্রায় পাঁচ বিঘা আয়তনের জলাশয়টির পাশে প্রায় বছর কুড়ি আগে একটি ছাগল প্রজননকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল। বর্তমানে সেখানে সে সব আর কিছু নেই। রয়েছে শুধু জলাশয়টি। এই জলাশয়েই প্রতি বছর শীতের শুরুতে আসত পরিযায়ী পাখির দল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখানে মূলত বালিহাঁস ও সারল জাতীয় পরিযায়ী পাখি আসত। সংখ্যাটা একশোরও বেশি। নভেম্বরের শেষ দিকে দল বেঁধে সেগুলি এসে মার্চ পর্যন্ত থাকত। পরিবেশকর্মীরা জানাচ্ছেন, খাবারের সন্ধানেই মূলত সাইবেরিয়া থেকে পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গায় এই ধরনের পাখিগুলি আসে।
কিন্তু কাঁকসার এই জলাশয়ে দু’বছর ধরে পরিযায়ী পাখির দেখা নেই বলে মন খারাপ এলাকাবাসীর। স্থানীয় বাসিন্দা প্রণব মুখোপাধ্যায় জানান, কয়েক বছর ধরে আস্তে আস্তে জলাশয়টি মজে যাচ্ছে। পরিযায়ী পাখিদের খাদ্যাভাব দেখা দিচ্ছে। তাই হয়তো সেগুলি আর আসছে না এখানে। দুর্গাপুরের পরিবেশকর্মী সোমনাথ লাহা জানান, পরিযায়ী পাখিদের না আসার কারণ, জলাশয়টি মজে যাওয়া। এর ফলে, মাছ, কীটপতঙ্গের অভাব হওয়ায় পাখিরা খাবার পাচ্ছে না। তাই হয়তো, অন্য কোথাও পরিযায়ী পাখির দল আস্তানা তৈরি করছে। সোমনাথের বক্তব্য, “পরিযায়ী পাখির দলকে ফিরিয়ে আনতে জলাশয় সংস্কার জরুরি। পাশাপাশি, জলাশয়ে মাছও ছাড়তে হবে।” পরিবেশকর্মীরা জানাচ্ছেন, পরিযায়ী পাখিদের আকৃষ্ট করার জন্য এক ধরনের গাছ রয়েছে। ‘জাইকা’ (জাপান ইন্টারন্যশনাল কর্পোরেশন এজেন্সি) প্রকল্পে সেই সব গাছ বেশি সংখ্যায় রোপণ করার কথাও বলা হচ্ছে। এই ধরনের গাছে সহজেই বাসা তৈরি করতে পারে পরিযায়ী পাখিরা।
বিষয়টি নিয়ে মলানদিঘি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গত পঞ্চায়েত বোর্ড জলাশয়টি এক বার সংস্কার করেছিল। এখন একশো দিনের প্রকল্পের কাজ বন্ধ। তাই পুকুরটি সংস্কার করা যাচ্ছে না। তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্ব-সহ দেখছি। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি
জানানো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy