এলাকায় পুলিশি পাহারা।
বেআইনি বালি খাদানের দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়াল কাঁকসার অজয়পল্লিতে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন উভয় গোষ্ঠীর মোট দশ জন। কয়েকটি বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরবাইকে। ইটের আঘাতে ভেঙে যায় পুলিশের গাড়ির কাচ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। দুই গোষ্ঠীর লোকজনই এলাকায় তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। যদিও তৃণমূলের দাবি, হামলা চালিয়েছে সিপিএম। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয় নদের পাড়ে দীর্ঘদিন ধরেই একটি অবৈধ বালি খাদান চলত। সেই খাদানে কাজ পাওয়া নিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রায়ই বিবাদ লেগে থাকত। পুজোর দিন কয়েক আগে এই খাদানটি বন্ধ হয়ে যায়। পুজো শেষে খাদানটি খোলার জন্য তৃণমূলের একাংশ উদ্যোগী হলে অন্য গোষ্ঠী বিরোধিতা করে। যাঁরা খাদান খুলতে আগ্রহী তাঁরা বুধবার সকালে দলীয় বৈঠক সেরে ফিরছিল। তারা যখন অজয়পল্লিতে আসে তখনই অন্য গোষ্ঠীর লোকজন লাঠি, রড, কুড়ুল নিয়ে চড়াও হয়। বোমা পড়ে বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়ে কাঁকসা থানার পুলিশ। পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশি টহল রয়েছে। গ্রাম প্রায় পুরুষশূন্য।
দুর্গাপুরে হাসপাতালে এক জখম।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই অজয় নদে ওই বালি খাদানটি চলছে। বর্তমানে খাদানটি যাঁরা ওই খাদানটি চালাচ্ছিলেন দলের অন্দরের গোষ্ঠী সমীকরণে তাঁরা জেলা (শিল্পাঞ্চল) সম্পাদক দেবদাস বক্সির ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। পুজোর কয়েক দিন আগে ওই খাদানে কাজ পাওয়ার দাবিতে দলের অন্য গোষ্ঠী আন্দোলন শুরু করে। বিবাদ এড়াতে পুজোর আগে খাদানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুজোর পরে খাদানটি খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ বার খাদান কোন গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে সেই নিয়েই এ দিনের সংঘর্ষ। দেবদাসবাবুর ঘনিষ্ঠ স্থানীয় তৃণমূল নেতা সমরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দল ও সিপিএমের কয়েকজন মিলেই এ দিন আমাদের উপরে হামলা চালিয়েছে।” যদিও দেবদাসবাবুর দাবি, “অবৈধ খাদানের সঙ্গে আমার অথবা আমার কোনও অনুগামীর সম্পর্ক নেই। এ দিন আমাদের দলের প্রয়াত কর্মী রাম হেমব্রমের স্মরণ সভার প্রস্তুতি চলছিল। তখনই সিপিএমের লোকজন আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে।” দলীয় রাজনীতিতে দেবদাসবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর লোক হিসাবে পরিচিত কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুনেছি, গ্রামবাসীরা সবাই মিলেই ওই খাদানটি চালাতেন। তবে এ দিনের ঘটনার সঙ্গে খাদানের কোনও যোগ রয়েছে কি না বলতে পারব না।”
যদিও হামলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলের পাল্টা দাবি, “বিধানসভা নির্বাচনের পরে ওই এলাকায় আমরা সংগঠনের কাজই করতে পারি না। সেখানে হামলার অভিযোগ হাস্যকর।”
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy