Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

উদ্বোধনই সার, চালু হয়নি কর্মরত মহিলাদের হস্টেল

উদ্বোধনের প্রায় চার মাস পরেও কর্মরতা মহিলাদের হস্টেল চালু হল না দুর্গাপুরে। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই হস্টেলটি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। অথচ, কর্মরতা বহু মহিলাকে শহরে থাকতে হচ্ছে চড়া ভাড়া গুণে। কর্মসূত্রে বহু মানুষ বাইরে থেকে এসে দুর্গাপুরে থাকেন। তাঁদের একটি বড় অংশ মহিলা।

তৈরি হয়ে পড়ে হস্টেল।  ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

তৈরি হয়ে পড়ে হস্টেল। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৪ ০১:৪৬
Share: Save:

উদ্বোধনের প্রায় চার মাস পরেও কর্মরতা মহিলাদের হস্টেল চালু হল না দুর্গাপুরে। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই হস্টেলটি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। অথচ, কর্মরতা বহু মহিলাকে শহরে থাকতে হচ্ছে চড়া ভাড়া গুণে।

কর্মসূত্রে বহু মানুষ বাইরে থেকে এসে দুর্গাপুরে থাকেন। তাঁদের একটি বড় অংশ মহিলা। শহরে এসে থাকার ব্যবস্থা করতে হিমসিম খেতে হয় তাঁদের। শহর বেড়ে চলার সঙ্গে বাড়ি ভাড়াও চড়ছে। সমস্যা মেটাতে দুর্গাপুরের সিটিসেন্টারে কর্মরতা মহিলাদের জন্য হস্টেল গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০০৮ সালে। শিলান্যাস করেন তৎকালীন বাম সরকারের স্বনিযুক্তি দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী রেখা গোস্বামী। দোতলা পর্যন্ত ঢালাইও হয়ে গিয়েছিল। এর পরে রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদল হয়। বাকি কাজ শেষ হয় গত বছর ডিসেম্বরে। সেখানে আপাতত ৪০ জনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে। প্রয়োজনে উপরে আরও দু’টি তলা গড়ার পরিকাঠামোও রয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে হস্টেলটির উদ্বোধন করেন আবাসন ও যুবকল্যাণ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে অরূপবাবু দাবি করেন, বাম আমলের ৩৪ বছরে কর্মরতা মহিলাদের জন্য হস্টেল গড়া হয়েছিল দু’টি। সেখানে নতুন সরকার আড়াই বছরেই দু’টি এমন হস্টেল গড়ে ফেলেছে। একটি দুর্গাপুরে এবং অন্যটি কলকাতার সল্টলেকে।

কিন্তু উদ্বোধনের পরে কয়েক মাস কেটে গেলেও দুর্গাপুরের হস্টেলটি চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ কর্মরতা মহিলাদের অনেকেই। একটি বেসরকারি টেলিফোন পরিষেবা সংস্থায় চাকরি করেন অনুজা শর্মা। তাঁকে আসানসোল থেকে রোজ যাতায়াত করতে হয়। অনুজা বলেন, “দুর্গাপুরে মেয়েদের জন্য তেমন মেস নেই। আমার একার পক্ষে চড়া বাড়ি ভাড়া গুণে থাকা মুশকিল। তাই বাধ্য হয়ে যাতায়াত করি।” বিধাননগরের একটি হোটেলে চাকরি করেন হুগলির আরামবাগের তরুণী তনুশ্রী কুণ্ডু। তিনি বলেন, “আমি একটি বাড়ির একতলার একাংশ ভাড়া নিয়ে থাকি। অন্য দিকে থাকে একটি পরিবার। থাকতে অসুবিধা হলেও কিছু করার নেই। কারণ, পুরো একতলাটি ভাড়া নেওয়ার সামর্থ্য নেই।” অনুজা, তনুশ্রীদের বক্তব্য, সরকারি উদ্যোগে তাঁদের মতো কর্মরতাদের জন্য হস্টেল গড়া হয়েছে। সেখানে রান্নাঘর থেকে শুরু করে সব রকম ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু চালু না হওয়ায় তা কারও কাজে আসছে না। অবিলম্বে হস্টেলটি তাঁদের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।

হস্টেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা দুর্গাপুরের আর এক বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। এডিডিএ-র পক্ষ থেকে আবাসন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে হস্টেলটি দ্রুত চালু করার উদ্যোগী হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন নিখিলবাবু। তবে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচন সংক্রান্ত কাজের জন্য হস্টেলটি চালু করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। শুক্রবার মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “হস্টেল পরিচালন সমিতি গঠন-সহ নানা পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তা সম্পন্ন হলেই বিজ্ঞাপন দিয়ে হস্টেল চালু করে ফেলা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

arpita mazumder durgapur ladies hostel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE