মেদিনীপুরে এল বাংলাদেশের উরস স্পেশাল ট্রেন। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
কোনও কাগজ নয়, মাটির অধিকারেই নির্ধারিত হোক নাগরিকত্ব। যিনি যে মাটিতে থাকেন, সেই মাটিই হোক তাঁর অধিকার।
এমনই মত আব্দুল আজিজ কাদেরি, মহম্মদ জাকির হোসেনের মতো একদল বাংলাদেশি নাগরিকের। উরস উৎসবে যোগ দিতে ও-পার বাংলা থেকে মেদিনীপুরের আসা বাংলাদেশি এই পুণ্যার্থীরা স্পষ্টই জানাচ্ছেন, তাঁদের অবস্থান এ দেশের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে। সেই সূত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনকেও সমর্থন করেন তাঁরা।
উরস উৎসব উপলক্ষে সোমবার সকালে মেদিনীপুরে এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশের বিশেষ ট্রেন। এ বার এসেছেন ২,৩০০ জন তীর্থযাত্রী। মেদিনীপুর শহরের মির্জাবাজারে জোড়া মসজিদ রয়েছে। সেখানেই এক সুফি সাধকের মৃত্যু বার্ষিকী স্মরণে উরস উৎসবের আয়োজন হয়। বসে মেলা। মেলায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই ভিড় করেন। আর সেই ১৯০২ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে মেদিনীপুরে আসছে ‘উরস স্পেশ্যাল’ ট্রেন। এ বার বিশেষ ট্রেনের ‘লিডার’ আব্দুল আজিজ কাদেরি জানালেন, এই ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে তিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে যুক্ত আছেন। নাগরিকত্ব আইন ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে মন্তব্য করেও আজিজ বললেন, ‘‘আমরা মনে করি, যে যেখানে বসবাস করেন সেই মাটিতে তাঁর একটা অধিকার আছে। সেই অধিকার থেকেই তাঁর নাগরিকত্ব পাওয়ারও অধিকার আছে।’’ .
আরও পড়ুন: ছাত্রভোটে শান্তির আর্জি সুরঞ্জনের
দেশভাগ, সীমান্তের কাঁটাতারের সত্যি ছাপিয়েও যে দুই বাংলার আবেগের সম্পর্ক রয়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন আজিজ। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এখানে যখন আসি তখন মনেই হয় না অন্য দেশে এসেছি। এত দিনে মেদিনীপুরবাসীর সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্ক ভালবাসার, সম্প্রীতির।’’ বাংলাদেশ থেকে আসা ফতে বিবি বলছিলেন, ‘‘উরস উৎসব দুই দেশকে ভালবাসার বন্ধনে বেঁধে রেখেছে।’’ আর সেই সম্পর্কের সূত্রেই মমতার নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন রয়েছে আজিজ, ফতেমাদের। মহম্মদ জাকির হোসেন নামে এক তীর্থযাত্রীর কথায়, ‘‘আমরা এক ভাষায় কথা বলি। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারত আমাদের সহযোগিতা করেছে। ভারতের প্রতি আমাদের মমত্ব আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ নিয়ে যে কথা বলছেন, আমাদেরও ওই একই কথা।’’
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকের জন্য পথে বেশি বাস
মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদও বলছিলেন, ‘‘আমাদের এক হৃদয়, এক প্রাণ। আমরাও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের তীব্র বিরোধিতা করছি।’’ মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতিরও মত, ‘‘সবাই মিলেমিশে থাকাটাতাই তো আমাদের ঐতিহ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy