ভুয়ো পাসপোর্ট মামলার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার রাজ্যের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বিরাটি থেকে আজ়াদ মল্লিক নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এ বার জানা গেল, ধৃত ব্যক্তি আদতে বাংলাদেশি নাগরিক। ১০ বছর আগে তিনি ভারতে এসেছিলেন। টাকার বিনিময়ে তিনি বাংলাদেশিদের জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দিতেন।
বুধবার সকালে ধৃত আজ়াদকে বিচারভবনের বিশেষ ইডি আদালতে হাজির করিয়ে ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয়েছিল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, হাওয়ালা চক্রে জড়িত ছিলেন আজ়াদ। দুর্নীতির কোটি কোটি টাকার উৎস কী, ওই টাকা অন্য কোথাও ব্যবহার করা হয়েছে কি না— সে সব জানতেই হেফাজতের আবেদন করেছিল ইডি। ইডির আরও বক্তব্য, আজ়াদের স্ত্রী, সন্তান এখনও বাংলাদেশেই থাকেন। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। এর পরেই ধৃতের ১৩ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন:
ইডি সূত্রে খবর, ধৃত আজ়াদ কাঁচরাপাড়ার একটি ক্যাফে থেকে ১২-১৩ হাজার টাকার বিনিময়ে ভুয়ো পাসপোর্ট বানানোর কাজ করতেন। কখনও কখনও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকাও দাবি করা হত। পাসপোর্টের পাশাপাশি অন্যান্য নথি ও পরিচয়পত্র বানানোর কাজও করতেন তিনি। তাঁর মোবাইলেও এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি ইডির। আজ়াদের দুটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ভুয়ো নথি ব্যবহার করে জাল পাসপোর্ট বানানোর এই চক্রের ‘মিডলম্যান’ হিসাবে কাজ করতেন আজ়াদ। বাংলাদেশেও এই চক্রের ‘এজেন্ট’ আছে বলে ইডির অনুমান। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আজ়াদের। নিজে এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের ব্যবসা এবং টাকাপয়সা লেনদেনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হলেও আড়ালে নিজের কারবার চালিয়ে যেতেন তিনি। এ ছাড়াও, ইডির দাবি, আজ়াদের মারফত প্রায় ২ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছে হাওয়ালা মাধ্যমে। ধৃতের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে সেই সংক্রান্ত তথ্যও পাওয়া গিয়েছে।
যদিও আজ়াদের আইনজীবী মহম্মদ হাসনাইন হোসেন আনসারির দাবি, যত কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে আদৌ তা হয়নি। ইডি দু’কোটিরও বেশি লেনদেনের কথা বললেও প্রমাণ দেখাচ্ছে মাত্র কয়েক লক্ষের। তাঁর আরও দাবি, তাঁর মক্কেল ভারতীয় নাগরিক। তবে স্ত্রী ও সন্তান বাংলাদেশে থাকেন, যা অস্বাভাবিক নয়।