সুপ্রিম কোর্টের মঙ্গলবারের শুনানি তালিকায় ছিল ডিএ (মহার্ঘ ভাতা) মামলা। কিন্তু শুনানি জন্য উঠলই না মামলাটি। শুধু তা-ই নয়, কবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে তা এখনই জানায়নি দেশের শীর্ষ আদালত।
মঙ্গলবার বিচারপতি বিক্রম নাথের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে পশ্চিমবঙ্গের ডিএ মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। মামলাটি ছিল শুনানি তালিকায় ৫১ নম্বরে। কিন্তু মঙ্গলবারও শুনানির জন্য ওঠেইনি। গত ২৫ মার্চ ডিএ মামলার শুনানির জন্য উঠেছিল সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু সেই শুনানি হয়নি। পিছিয়ে যায় শুনানি। ২২ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে মঙ্গলবারও ডিএ মামলার শুনানি হল না।
এই মামলা শেষ বার শুনানি হয়েছিল গত বছর ১ ডিসেম্বর। তবে সেই শুনানির আগের শুনানিতে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ নিয়ে আরও বিস্তারিত শুনানি প্রয়োজন। তার পরে সময়ের অভাবে মামলাটির আর শুনানি হয়ে ওঠেনি। প্রতি বারই সময়ের অভাবে পিছিয়ে গিয়েছে মামলার শুনানি।
কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-র দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট রাজ্যকে কেন্দ্রের সমতুল ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টে জয়ী হয় রাজ্য সরকারি কর্মীদের কনফেডারেশন, ইউনিটি ফোরাম এবং সরকারি কর্মচারী পরিষদ। কিন্তু হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।
২০২২ সালের ৩ নভেম্বর মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। প্রথম শুনানি হয় সে বছরের ২৮ নভেম্বর। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। অন্য দিকে, মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কয়েক দফায় ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারের রাজ্য বাজেটেও ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন:
গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাজেট বক্তৃতায় রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের কর্মীদের ডিএ চার শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন। রাজ্য সরকারের কর্মীদের পাশাপাশি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী, সরকার অধিকৃত, পঞ্চায়েত, পুরসভার কর্মীদেরও ডিএ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮ শতাংশ। ১ এপ্রিল থেকে এই ডিএ পাচ্ছেন তাঁরা। সুবিধা পাচ্ছেন পেনশনভোগীরাও। তবে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে এখনও অনড় রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। তাদের দাবি, রাজ্য সরকার ডিএ বৃদ্ধি করলেও কেন্দ্রের সঙ্গে ডিএ হারের ফারাক এখনও ৩৫ শতাংশ।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা ছিল বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চে। তবে শুনানি শেষ হওয়ার আগেই তিনি অবসর নেন। ফলে গত চার মাস ধরে মামলাটি শুনানির জন্য আসেনি। গত মার্চে বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে যায় ওই মামলাটি। কিন্তু শুনানি হয়নি।