জাল পাসপোর্ট মামলার তদন্তে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই সক্রিয় হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। মঙ্গলবার সাতসকালে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে পুরোদমে শুরু হল তল্লাশি অভিযান। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্তও কলকাতা, বিরাটি ও নদিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ইডির অভিযান চলছে।
গত বছরের শেষে ভুয়ো নথি দাখিল করে পাসপোর্ট তৈরির বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পাসপোর্ট তৈরির একটি চক্রের কথা জানতে পারে কলকাতা পুলিশ। একে একে গ্রেফতার হন দশ জন। তাঁদের মধ্যে এক জন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক এবং ডাক বিভাগের দু’জন কর্মীও রয়েছেন। এর পরেই জানা যায়, রাজ্য জুড়ে এই চক্রের উপস্থিতি রয়েছে। গত মাসে ওই মামলায় চার্জশিট জমা দেয় ভবানীপুর পুলিশ। তাতেই বলা হয়, ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ১৩০ জন। এর মধ্যে ১২০ জনই বাংলাদেশি নাগরিক, যাঁরা নথি জাল করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। এঁদের মধ্যে কয়েক জনের বিরুদ্ধে ‘লুক আউট নোটিস’ও জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে ওই মামলায় তদন্ত শুরু করে ইডি। সেই তদন্তেই এ বার আরও সক্রিয় হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলেন তাঁদের আধিকারিকেরা।
গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর থানায় প্রথম জাল পাসপোর্টের অভিযোগটি দায়ের হয়েছিল। অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছিল মোট ৩৭ জনের নাম। এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ভুয়ো নথি জমা দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করাতেন তাঁরা। এর পরেই বিশেষ দল গঠন করে শুরু হয় তদন্ত। দফায় দফায় গ্রেফতার করা হয় রিপন বিশ্বাস, দীপক মণ্ডল, সমরেশ বিশ্বাস ও দীপঙ্কর দাস- সহ ১০ জনকে। তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে কম্পিউটার, ব্যাঙ্কের জাল নথি, প্রায় ৩৬টি পাসপোর্টের প্রতিলিপি, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা। অভিযুক্তদের জেরার পর পুলিশ জানতে পারে, ভুয়ো নথি কারবারের মূলচক্রী দীপঙ্কর। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত চালিয়ে ১৩০ অভিযুক্তের তথ্য হাতে আসে পুলিশের।