মৃত স্বপ্নদীপ কুন্ডু (বাঁ দিকে)। ধৃত দীপশেখর দত্ত (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন দীপশেখর দত্ত নামে বাঁকুড়ার এক যুবক। ১৯ বছরের দীপশেখর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাবা-মা জানাচ্ছেন, রবিবার সকালে ছেলের গ্রেফতারির খবর পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কিছুতেই বিশ্বাস করেন না যে, ছেলে খারাপ কোনও কাজ করতে পারেন। কারণ, ছোট থেকেই দীপশেখর পরোপকারী।
দীপশেখরের বাড়ি বাঁকুড়ার মাচনতলা এলাকায় ফেমাস গলিতে। বাঁকুড়ার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর গত বছরই অর্থনীতি বিষয়ে ভর্তি হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। দীপশেখরের বাবা মধুসূদন দত্ত পেশায় জমির কারবারি। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে থেকেই অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ত। ও এমন একটা অপরাধে কোনও ভাবেই যুক্ত থাকতে পারে না বলেই আমার স্থির বিশ্বাস।’’ দীপশেখরের মা সঙ্গীতা দত্ত বলেন, ‘‘সকালেই জানলাম আমার ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু ও কোনও ভাবে এমন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে না। বরং ও হয়তো ছেলেটিকে (স্বপ্নদীপ) সাহায্য করতে গিয়েছিল। আমাকে ফোনও করেছিল। ও খুব ভয় পেয়ে আছে। ওকে আমি অনেক বুঝিয়েছি। আমি ওর পাশে আছি।’’ তাঁর দাবি, স্বপ্নদীপ তাঁর ছেলের সাহায্য চাইতেন। বলতেন, তিনি ভয় পাচ্ছেন। তাঁকে র্যাগিং করা হচ্ছে। এবং দীপশেখর তাঁকে সাহস জোগাতেন। দীপশেখরের মায়ের কথায়, ‘‘আমার ছেলে ওকে বলত, ‘আমি আছি। তোর কিচ্ছু হবে না। তুই ভয় পাস না।’” এর পরেই ধৃতের মায়ের সংযোজন, ‘‘আমার ছেলে এ সব করতে পারে না। আর যদি তর্কের খাতিরে ধরে নিই, ও এমন কিছু করেছে, তা হলে শাস্তি পাক। কিন্তু আমি জানি, ও এমন কিছু কোনও মতেই করতে পারে না।’’
দীপশেখরের মায়ের আরও দাবি, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর ছেলের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়। তখন ছেলে তাঁকে বলেছেন যে, তিনি অনেক বোঝাতেন স্বপ্নদীপকে। দীপশেখর নাকি মাকে এটাও বলেছেন যে, হস্টেলে র্যাগিং হয়, এটা আগে বড়দের মুখে শুনে সব সময় ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতেন স্বপ্নদীপ। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেটি ঘরোয়া। অত চালাক নয়। ওই সব শুনেই ও ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আমার ছেলে ওর পাশে ছিল বলে জানিয়েছে।’’
দীপশেখরের বাবা মধুসূদন বলছেন, ‘‘আমি চাই প্রকৃত দোষীরা যেন শাস্তি পান। তার মধ্যে যদি আমার ছেলে থেকে থাকে, তবে ও শাস্তি পাক। এক জন বাবা হিসেবে অন্যের কোল খালি হয়ে যাওয়া আমিও সহ্য করতে পারছি না। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমার ছেলে নির্দোষ। এখন তদন্তের জন্য পুলিশ গ্রেফতার করতেই পারে। সত্যিটা সামনে আসুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy