প্রতীকী ছবি।
চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগের প্রকল্প ‘অগ্নিপথ’। দেশজোড়া বিক্ষোভের মধ্যেই এই প্রকল্পে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল ভারতীয় সেনা। এ বার শুরু হচ্ছে নিয়োগ প্রক্রিয়া। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগের র্যালি হচ্ছে। তার মধ্যে খড়্গপুর অন্যতম। নভেম্বরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে হবে ‘আর্মি রিক্রুটমেন্ট র্যালি’। তার প্রস্তুতি নিয়ে সেনার সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বৈঠক হয়েছে শুক্রবার। মেদিনীপুর কালেক্টরেটের সভাকক্ষে ওই বৈঠকে পুলিশ, স্বাস্থ্য, পরিবহণ, পূর্ত, বিদ্যুৎ, দমকল প্রভৃতি দফতরের আধিকারিকেরা ছিলেন। র্যালিতে প্রচুর আবেদনকারী আসবেন। কী ভাবে সবটা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে, সেই আলোচনা হয়েছে। কোন দফতর কী করবে, তাও চূড়ান্ত হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েষা রানি মানছেন, ‘‘মেদিনীপুরে কো-অর্ডিনেটিং কনফারেন্স হয়েছে।’’ আশেপাশের ছ’টি জেলার আবেদনকারীরা খড়্গপুরে র্যালিতে আসবেন। ওই র্যালি আয়োজনের কথা জানিয়ে ডিরেক্টর রিক্রুটিং থেকে প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ১৬ থেকে ২৫ নভেম্বর ১০ দিনের র্যালি হওয়ার কথা খড়্গপুরে রেলের সেরসা স্টেডিয়ামে। শেষ দু’দিন অর্থাৎ, ২৪ এবং ২৫ নভেম্বর শুধুমাত্র মহিলা আবেদনকারীদের জন্য ধার্য হতে পারে। আসতে পারেন প্রায় ৩০ হাজার আবেদনকারী। দিনে প্রায় ৩ হাজার আবেদনকারী। সেই মতোই প্রস্তুতি সারা হচ্ছে। চাকরিপ্রার্থীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন হয়েছে।
এই প্রকল্পে যাঁরা নিযুক্ত হবেন, তাঁদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’। প্রথম বছরে প্রায় ৪০ হাজার অগ্নিবীর নিয়োগ হওয়ার কথা। এ জন্য দেশ জুড়ে প্রায় ৮০টি ‘আর্মি রিক্রুটমেন্ট র্যালির আয়োজন হচ্ছে। র্যালিতে উত্তীর্ণদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবির হবে। নিয়োগের চার বছরের মাথায় ২৫ শতাংশকে সেনায় স্থায়ী পদ দেওয়া হবে। বাকি ৭৫ শতাংশ সেনায় থাকতে পারবেন না। তাঁরা যাতে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারেন, তাই সেবা-নিধি প্রকল্পে ১১ থেকে ১২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। অগ্নিপথ প্রকল্প ঘোষণার পরেই বিক্ষোভের আগুন ছড়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। পশ্চিমবঙ্গেও তার আঁচ পড়েছিল। প্রকল্পের বিরোধিতায় সুর চাড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের নালিশ ছিল, বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনা না করেই অগ্নিপথের মতো প্রকল্প এনেছে কেন্দ্র। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা ‘সেনাকে দখল করা হচ্ছে কেন, বিজেপি জবাব দাও’ বলে হুঙ্কার দেন। অগ্নিপথ প্রকল্প বাতিল করে সরাসরি সেনায় লোক নেওয়ার দাবিও জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী।
ভারতীয় সেনা অবশ্য জানায়, প্রকল্প প্রত্যাহারের প্রশ্নই নেই। সেই মতো প্রকল্পের অধীনে ‘আর্মি রিক্রুটমেন্ট র্যালি’ হচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে র্যালি করতে সহায়তার হাত বাড়াচ্ছে মমতা প্রশাসনও। জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাসের খোঁচা, ‘‘অনেকেই না জেনে-বুঝে অগ্নিপথ প্রকল্পের সমালোচনা করেছিলেন। পরে তাঁদের বোধোদয় হয়েছে। এটা স্পষ্টে, যুব সমাজ এই প্রকল্পে আগ্রহী।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর তথা বিধায়ক অজিত মাইতির অবশ্য বক্তব্য, ‘‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিশ্বাসী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রকাঠামো তৈরির দিকে যেতে চাইছে মোদী সরকার। আমাদের প্রতিবাদ সেখানেই।’’ একই সঙ্গে অজিত জুড়ছেন, ‘‘সেনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের র্যালি আয়োজনে প্রশাসন সাহায্য-সহযোগিতা তো করবেই।’’ একাধিক মহল মনে করাচ্ছে, প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় নীতিগত বিরোধিতার ছাপ থাকে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy