কার্যকরী এবং সহজ শরীরচর্চার মধ্যে অন্যতম হল, হাঁটাহাঁটির অভ্যাস। দিনে নির্দিষ্ট সময় মেনে হাঁটলে ওজন ঝরানো, উৎকণ্ঠা কমানো, হার্টের রোগের ঝুঁকি কমানো বা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করা সম্ভব। কেউ কেউ খাওয়াদাওয়ার পর হাঁটেন, কেউ বা খালি পেটে। ভরা পেটে না কি খালি পেটে, কোন অবস্থায় হাঁটলে বেশি উপকার, এই ধন্দ রয়েছে অনেকের মনেই। দু’ধরনের হাঁটাতেই ক্যালোরি পোড়ে। ফলে ওজনও ঝরে। কিন্তু তুলনামূলক আলোচনায় কোনটি জিতবে? কী বলছেন চিকিৎসকেরা?
দিল্লির পুষ্টিবিদ ফারেহা শনম বলছেন, ‘‘যাঁরা কেবল ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের খালি পেটে হাঁটা উচিত। এটিকে ‘ফাস্টিং কার্ডিয়ো’ বলা হয়।’’
খালি পেটে হাঁটা
যখন কেউ খালি পেটে হাঁটেন, সেই সময় খাবার থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি বা গ্লুকোজ় পায় না শরীর। তাই বাধ্য হয়ে শরীর জমে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট পোড়াতে শুরু করে হাঁটার শক্তি পাওয়ার জন্য। ফলস্বরূপ, শরীর থেকে ফ্যাট কমতে শুরু করে এবং ওজন হ্রাস পায়। খালি পেটে রোজ সকালে হাঁটার অভ্যাস থাকলে হজমের সমস্যাও দূর হয়ে যাবে। তা ছাড়া সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই যদি হাঁটতে যাওয়া যায়, তাতে ভিটামিন ডি বেশি পরিমাণে পায় শরীর। সেই সময় রোদের তেজও কম থাকে, যা থেকে ভিটামিন ডি-ও ভাল পরিমাণে পাওয়া যায়।

খাবার খাওয়ার পর যখন হাঁটেন, তখন শরীর সেই খাবার থেকেই পাওয়া গ্লুকোজ়কে শক্তির জন্য ব্যবহার করে। ছবি: সংগৃহীত।
গুরুগ্রামের ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক তুষার তায়ল বলছেন, ‘‘হাঁটার সময়ে সঙ্কোচন-প্রসারণের জন্য পেশিগুলি রক্ত থেকে চিনি বা শর্করা গ্রহণ করে। কিন্তু না খেয়ে হাঁটার সময় রক্তে শর্করার পরিমাণ কম থাকে। পেশির শক্তির জোগান দিতে তখন লিভার গ্লাইকোজ়েনগুলিকে ভেঙে গ্লুকোজ়ে পরিণত করে।’’
আরও পড়ুন:
ভরা পেটে হাঁটা
খাওয়ার পরে হাঁটারও একাধিক উপকারিতা এবং নিজস্ব কিছু সুবিধা রয়েছে। খাবার খাওয়ার পর যখন হাঁটেন, তখন শরীর সেই খাবার থেকেই পাওয়া গ্লুকোজ়কে শক্তির জন্য ব্যবহার করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যাঁরা ডায়াবিটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এটি। যদিও খালি পেটে হাঁটার তুলনায় ভরা পেটে হাঁটায় কম ক্যালোরি পোড়ে, তা-ও খাওয়ার পর ১০-১৫ মিনিট হাঁটলে হজমশক্তি উন্নত হয়, ব্লোটিংয়ের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।