একসঙ্গে: পতাকা আলাদা, বসার জায়গা নয়। হবিবপুরে। নিজস্ব চিত্র
লাল মাটির রাস্তা। রাস্তার দু’ধারে তাল, খেজুর, নিমের সারি সারি গাছ। গাছের ছায়ায় ত্রিপল পেতে বসে রয়েছেন সিপিএম কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে বসেই মুড়ি-ঘুগনি খাচ্ছেন কংগ্রেস কর্মী। ওই ত্রিপলে বসেই গল্পে মশগুল বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীরাও। রবিবার দিনভর ‘সৌজন্যে’র এমনই ছবি দেখা গেল মালদহের হবিবপুরের কালীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
গনগনে রোদের তাপে ঝলছে যাচ্ছিল এ দিনের হবিবপুর। ভোটের উত্তাপে সরগরম হয়ে উঠছে বিধানসভার একাধিক বুথ। সেই সময় ভিন্ন এক ছবি দেখা গেল এখানে। কালীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০৬ ও ২০৭ নম্বর বুথ রয়েছে। আর দু’টি বুথই মহিলা পরিচালিত। লাল মাটির রাস্তা দিয়ে বুথে পৌঁছতে হয় ভোটারদের। পিচ রাস্তা থেকে লাল মাটির
মেঠো পথে উঠতেই ডান-বাম রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী কার্যালয়। ত্রিপল পেতে বসে রয়েছেন সিপিএমের দুই কর্মী। ত্রিপলের চারপাশে মাটিতে পোঁতা লাল ঝান্ডা। সেখানেই বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে বসে রয়েছেন বাণেশ বর্মণ। মুড়ি-ঘুগনি খাচ্ছেন দুলাল বর্মণ। তাঁদের পাশেই রয়েছেন বিপুল বিশ্বাস,
প্রণব বর্মণেরা।
ভোট কেমন হচ্ছে? প্রশ্ন শুনে সকলেরই একবাক্যে উত্তর, এই বুথে কোনও গোলমাল নেই। সবাই শান্তিতেই ভোট দিচ্ছেন। পঞ্চায়েত হোক কিংবা লোকসভা, রাজনৈতিক গোলমাল নেই বলে দাবি তাঁদের। মুড়ি-ঘুগনির প্যাকেট হাতে নিয়ে দুলালের উত্তর, ‘‘আমি কংগ্রেস কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস করছি। আগামিদিনেও করব। দল দলের জায়গায় থাকবে। পাশাপাশি, সৌজন্যও থাকবে।” বিনয়-খগেনদের বক্তব্য, তাঁরা সিপিএম কর্মী। তাঁরা চারটে দল একসঙ্গে বসেই ভোটের কাজকর্ম করছেন। এমন সৌজন্যের ছবি কি ক্রমশ কমছে? তৃণমূল কর্মী বিপুল, প্রণবেরা জানালেন, অন্য কোথায় কী হচ্ছে তাঁরা বলতে পারবেন না। তবে তাঁদের এখানে পরিবেশ এমনই থাকে সব সময়। দল ভিন্ন থাকলেও মানুষগুলো সকলেই পরিচিত। সকাল-বিকেল তাঁদের সঙ্গেই তাঁদের ওঠা-বসা। রাজনৈতিক কারণে গ্রামের পরিবেশ কখনও বদলাবে না বলে দাবি করেন বিজেপি কর্মী বাণেশ। তিনি বলেন, “অশান্তি বিবাদ নয়, গ্রামের উন্নয়নই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”
বাইরের সৌজন্যের ছবি দেখে দিনের শেষে স্বস্তিতে মহিলা পরিচালিত ভোটকর্মীরা। ভোটকর্মী সমাপ্তি হালদার বললেন, “লোকসভা ভোটে বুথ সামলেছিলাম শহরের। উপনির্বাচনে গ্রামের বুথে আসার আগে দুশ্চিন্তা কাজ করছিল। তবে এখন আর নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy