চোর আটকাতে পোলট্রির সামনে লাগানো ছিল বিদ্যুতের তার। তারই সংস্পর্শে এসে মৃত্যু হল তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর। গুরুতর আহত তার দুই ভাইকে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে বসিরহাটের চাঁদপুর গ্রামের মসজিদ পাড়ায় এই ঘটনার পরে পোলট্রি মালিক গোলাম নবি পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁর খোঁজ চলছে। মহিমা খাতুন (১১) নামে মৃত ছাত্রীর দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তের জন্য।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বসিরহাট ২ ব্লকের শ্রীনগর-মাটিয়া পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে এ দিন বেলা ২টো নাগাদ ঘাস কাটতে গিয়েছিল মহিমা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। বোনকে বাঁচাতে গিয়ে দাদা জাহিরুল মণ্ডল বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ে। কাছেই ছিল তাদের ছোট ভাই জামিরুল। একই অবস্থা হয় তারও। খবর পেয়ে এলাকার বাসিন্দারা বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিন ভাইবোনকে উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে যান।
পুলিশ জানায়, হাসপাতালের পথেই মৃত্যু হয় মহিমার। তার ভাইদের পাঠানো হয় কলকাতায়। এ দিকে, এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামের মানুষ। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেখে তত ক্ষণে সপরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন গোলাম নবি। ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনও রকমে বাসিন্দাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রেমেন্দ্র মল্লিকও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রেমেন্দ্রবাবু পরে বলেন, “বেআইনি ভাবে পোলট্রি ঘিরে বিদ্যুতের তার লাগানোয় এর আগে কুকুর-শিয়াল-হনুমানের মৃত্যু হয়েছে বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। এত সব ঘটনা ঘটনার পরে বাসিন্দাদের বারণ সত্ত্বেও মুরগি চুরি আটকাতে ওই তার খোলা হয়নি। তারই জেরে এমন মর্মান্তিক ঘটনা।”
মহিমার বাবা রফিকুল মণ্ডল, মা হালিমা কথা বলার মতো অবস্থাতেই নেই। গ্রামেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। পুলিশ ও বিদ্যুৎ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নিজের বাড়ি বা ব্যবসার নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য নাগরিকের জীবন এ ভাবে বিপন্ন করাটা অত্যন্ত বড় অপরাধ। অন্য কোনও এলাকায় বিদ্যুতের এমন ব্যবহার করা হয়ে থাকলে তা অবিলম্বে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy