জমে উঠেছে সুন্দরবনে ইলিশ উৎসব। — নিজস্ব চিত্র।
কেবল চোখে দেখা নয়, চেখেও দেখা!
বাঘ দেখার পাশাপাশি ইলিশের টানে বর্ষায় পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে সুন্দরবনে। ইলিশ উৎসবের হাত ধরে ভরা বর্ষায় নদীবক্ষে লঞ্চ, ভুটভুটিতে চেপে ইলিশের বিভিন্ন পদের স্বাদের টানে পর্যটকেরা আসছেন সুন্দরবনে। শীতের চেনা মরসুমের সঙ্গে বর্ষায় এমন ভিড়ে উৎসাহী পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
বছর দু’য়েক করোনা সংক্রমণের কারণে ইলিশ উৎসবে সে ভাবে উৎসাহ দেখা যায়নি। গত বছর থেকে পর্যটকেরা আবারও ইলিশ উৎসবে ভিড় জমাচ্ছেন। এ বার প্রমাণ সাইজের ইলিশ পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়াও যাচ্ছে। সর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ বা ইলিশের বিরিয়ানির স্বাদ নিতে নিতে বৃষ্টিস্নাত সুন্দরবন দর্শনে উৎসাহ দেখাচ্ছেন অনেকেই। ট্যুর অপারেটরেরা জানাচ্ছেন, গত ১০ দিনে ১৮-২০ হাজার পর্যটক এসেছেন। গত বছর এ সময়ে সংখ্যাটা ১০ হাজারও ছাড়ায়নি বলে তাঁদের দাবি।
গত কয়েক বছর সে ভাবে দেখা মেলেনি ইলিশেরও। পর্যটন ব্যবসায়ীরা কোনও মতে ছোট ইলিশ দিয়েই পর্যটকদের শান্ত করেছিলেন। তবে এ বার মরসুমের শুরু থেকেই প্রচুর ইলিশ মিলছে। পাশাপাশি, পেল্লায় আকারের ইলিশও ধরা পড়ছে। উদ্যোক্তারা এক দিকে যেমন ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ থেকে পর্যটকদের জন্য ইলিশ কিনছেন, তেমনই ঝড়খালিতেও যে ইলিশের ট্রলার ঢুকছে সেখান থেকেও ইলিশ কিনছেন। পর্যটন ব্যবসায়ী নিউটন সরকার বলেন, "আমরাই প্রথম সুন্দরবনে ইলিশ উৎসব শুরু করেছি দশ বছর আগে। আমাদের লক্ষ্য থাকে, পর্যটকদের ভাল ইলিশ খাওয়ানো। ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা থেকে ইলিশ আনা হয়।”
পর্যটন ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্ষার নিরিখে চলতি বছরে ইলিশ উৎসবকে কেন্দ্র করে রেকর্ড ভিড় দেখা যাচ্ছে। প্রায় প্রতি দিনই পর্যটকেরা আসছেন। সপ্তাহান্তে ভিড় উপচে পড়ছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, শীতে সুন্দরবন ভ্রমণের মরসুমে যা ভিড় হয়, তার থেকেও বেশি পর্যটকদের ভিড় দেখা যাচ্ছে এ বারের ইলিশ উৎসবে। পর্যটন ব্যবসায়ী স্বরূপ মান্না বলেন, "বর্ষার শুরু থেকেই ভাল ইলিশের জোগান রয়েছে। তাই ইলিশের বিভিন্ন পদ চেখে খুশি পর্যটকেরা।”
সোদপুর থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নীলার্ণব রায় বলেন, ‘‘অনেকদিন ধরেই সুন্দরবনের ইলিশ উৎসবে আসার ইচ্ছে ছিল। এবার সাধ পূরণ হল। অসাধারণ ব্যবস্থা। দারুণ ইলিশ খেয়েছি, ফের আসার ইচ্ছে আছে।’’ বর্ধমান থেকে আসা পর্যটক চৈতী সেন বলেন, ‘‘আগেও সুন্দরবনে এসেছি, তবে শীতকালে। বর্ষায় ও যে সুন্দরবনকে অসাধারণ লাগে তা এখন না এলে বুঝতাম না। সঙ্গে ইলিশের হরেক রকম লোভনীয় পদ। খুব ভাল কাটল।’’
সুন্দরবন পিউপিল ওয়াটার সোসাইটির সম্পাদক উপানন্দ বৈদ্য বলেন, "সুন্দরবনে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও টানা লকডাউনে গত কয়েক বছর ধরে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন ব্যবসা। এখন যে ভাবে পর্যটকেরা আসছেন, তাতে আমরা আশাবাদী, আগের ক্ষতি পূরণ করা যাবে।” তিনি আরও বলেন, “আগে শুধুমাত্র শীতের মরসুমে পর্যটকেরা সুন্দরবনে আসতেন। এখন সারা বছরই আসছেন। এটা পর্যটনের সঙ্গে যুক্তদের জন্য ইতিবাচক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy