স্বনির্ভর: কাজে ব্যস্ত সুপ্রীতি। নিজস্ব চিত্র
পিঠে ঢাউস ব্যাগে রকমারি পসরা। ওজন অন্তত ৫০ কেজি। সেই ব্যাগ নিয়েই মোটরবাইকে ছুটে বেড়ান হুগলির রাজহাটের বারোল গ্রামের সুপ্রীতি সিংহ। সংসার চালাতে একটি নামী ই-কমার্স সংস্থার সামগ্রী বাড়ি বাড়ি সরবরাহের কাজ করেন তিনি। সাধারণত পুরুষদেরই এই কাজে দেখা যায়। স্বামী-সন্তানকে ভরসা দিতে পরিশ্রমের এই কাজই বেছে নিয়েছেন বছর সাঁইত্রিশের যুবতী।
সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে বেরোতে হয়। ব্যান্ডেলে অফিস থেকে মালপত্র নিয়ে বাইকে চেপে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেন। রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দিল্লি রোড, জিটি রোড থেকে অলিগলিতে ছোটে তাঁর বাইক। কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে রাত ৯টা বাজে। কোনও দিন তারও বেশি।
সুপ্রীতি বলেন, ‘‘প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০টি বাড়িতে মালপত্র ডেলিভারি করি। ব্যান্ডেল, রাজহাট, সুগন্ধা-সহ নানা জায়গায় যাই। রোজ প্রায় ১৫ ঘণ্টা বাইক চালাতে হয়।’’ পুজোয় সবাই যখন আনন্দ করেন, সুপ্রীতির ছুটি নেই। বরং, কাজের বহর বাড়ে। সময়ে কাজ শেষেরতাগিদে বেশির ভাগ দিন দুপুরে ভাত খাওয়া হয় না। বিস্কুট, শুকনো খাবারে পেট ভরে।
বাড়িতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়ে এবং তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ছেলে আছে। স্বামী স্বপন সিংহ বেসরকারি সংস্থায় গাড়ি চালান। সেই আয়ে সংসার চলে না। তা ছাড়া, ঘর করতে গিয়ে ধারদেনা হয়েছে। তাই, সুপ্রীতির কাজ থামে না। তিনি জানান, দিল্লি রোডের ধারে তাঁর ভাতের হোটেল ছিল। সঙ্গে চা-বিস্কুট, ঘুগনি প্রভৃতি। ভালই চলছিল। লকডাউনের সময় বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে বাড়িতে মুদিখানা দোকান খুলেছিলেন। পুঁজির অভাবে বেশিদিন চালাতে পারেননি। শেষে ডেলিভারি-গার্ল হিসেবে কাজের সিদ্ধান্ত নেন। চার মাস ধরে তিনি এই কাজ করছেন।
স্বপন বলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাই। এর মধ্যে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা। স্ত্রী সেলাইয়ের কাজ জানে। ভাল রান্নাও করে। সংসার চালাতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে। মেয়েরা যে কোনও কাজে পিছিয়ে নেই, ওকে দিয়েবুঝতে পারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy