জোড়াতালি: ত্রিপলের নীচে এ ভাবেই চলে রান্না। নিজস্ব চিত্র।
উনুনের উপরে টাঙানো ছেঁড়া পলিথিন। বৃষ্টি এলে ছাতাও ধরতে হয়। উনুন সামলানো গেলেও ভিজতে হয় রাঁধুনিকে।
মগরাহাটের ডোডালিয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের চারিদিকে আগাছার জঙ্গল। তার মধ্যেই চলে কাজকর্ম।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেকে জমি দিতে চাইলেও নানা জটিলতায় ভবন তৈরি হচ্ছে না।
ডোডালিয়া সর্দারপাড়ায় ২৩৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি ২০০৫ সালে অনুমোদন পায়। শুরু থেকেই পুকুর পাড়ে ত্রিপল টাঙানো ছাউনির নীচে পরিষেবা চলছে। ৮৪ জন শিশু আসে। এ ছাড়া, গর্ভবতী, প্রসূতি আসেন আরও ১০ জন। কর্মী ও সহায়িকা আছেন। কিন্তু নিজস্ব ভবন না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় সকলকে।
খানাখন্দে ভরা ইটের রাস্তা পার হয়ে পাড়ায় ঢোকার মুখে পুকুর পাড়ে কেন্দ্রটি রয়েছে। নিজস্ব শৌচালয়ও নেই। গ্রামের নলকূপের জল ব্যবহার করতে হয়। সকালে কচিকাঁচারা মায়ের কোলে চেপে কেন্দ্রে আসে। বৃষ্টি হলে সমস্যা বাড়ে। ছেঁড়া ত্রিপলের ছাউনি দিয়ে জল পড়ে। রান্নার সময়ে উনুনের উপরে ছাতা টাঙাতে হয়। জোরে বৃষ্টি নামলে রান্না বন্ধ করা ছাড়া উপায় নেই। ওই অবস্থায় আশপাশের বাড়িতে কচিকাঁচার আশ্রয় নেয়।
কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন তৈরির জন্য বিনামূল্যে জমি দিতে রাজি আছেন বাসিন্দারা। গ্রামের প্রবীণ নাগরিক গোষ্ঠ সর্দার, প্রবোধ সর্দারেরা জানালেন, প্রায় এক শতক যে জমিতে ত্রিপল টানিয়ে পরিষেবা দেওয়ার কাজ চলছে, ওই জমি প্রায় আশি বছর আগে দলিল করা হয়েছিল। এতদিনে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অন্য প্রমাণপত্র দেখানো হলেও তাতেও কাজ হচ্ছে না। পাড়ার বাচ্চারা উপযুক্ত পরিষেবা পাক, সকলেই চান।
কেন্দ্রের কর্মী ঝর্ণা মণ্ডল বলেন, ‘‘বছরের পর বছর ধরে এ ভাবে কাজ চলছে। মাথার উপরে কোনও ছাউনি নেই। প্রায় খোলা আকাশের নীচে পরিষেবা পাচ্ছে মা-শিশুরা। অনেকে আমার উপরেই ক্ষোভ উগড়ে দেন।’’ তিনি জানালেন, দিন কয়েক আগে ত্রিপল চাইতে ব্লক প্রশাসনের কাছে গিয়েছেলেন। কিন্তু তা মেলেনি।
জানা গেল, ক’দিন আগে কেন্দ্র পরিদর্শনে এসেছিল পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদল। পঞ্চায়েতে আবেদন করলে ত্রিপল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এর বেশি কিছু আশ্বাস দিতে পারেননি।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মগরাহাট ২ ব্লকে রয়েছে ৩৯৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। এর মধ্যে মাত্র ৭০টির নিজস্ব ভবন তৈরি করা গিয়েছে। বাকিগুলি চলছে ক্লাবে, স্কুল ঘরে, বারান্দায়, আটচালায় বা ভাড়া বাড়িতে।
নৈনান পঞ্চায়েতের প্রধান বিজন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি নিজে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব কী সমস্যা আছে। তারপরে পঞ্চায়েত থেকে যেটুকু সাহায্য করার করব। পাশাপাশি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্ত বিষয়ে জানাব।’’ এ বিষয়ে মগরাহাট ২ ব্লক সিডিপিও তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘‘জমির সমস্যার কারণে নিজস্ব ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না।’’ বিডিও শেখ আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, কেন্দ্রের সমস্যাগুলি তাঁকে জানালে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy