Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Teenage Marriage

নাবালিকা বিয়ে, গ্রেফতার করা হল পাত্রীর বাবাকেও

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৭:০৩
Share: Save:

এক বার কোনওরকমে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে পারলে আর কিছু করতে পারবে না প্রশাসন— এমন ভাবনা ঢুকে গিয়েছে অনেকের মনে। নাবালিকা বিয়ের ঘটনা রুখতে এ বার তাই গ্রেফতারির মতো কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে পুলিশ। প্রশাসন মনে করছে, নাবালিকার বিয়ে রোখার জন্য পাত্র বা পাত্রীর পরিবারের থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া যথেষ্ট নয়।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা চাইল্ডলাইন সূত্রের খবর, জুলাইয়ের প্রথম দুই সপ্তাহে জয়নগর ১ ব্লক এবং জয়নগর-মজিলপুর পুরসভা এলাকায় দুই নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হয়। খবর দেরিতে আসায় বিয়ে আটকানো সম্ভব না-হলেও নাবালিকাকে বিয়ে করার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। একটি ক্ষেত্রে নাবালিকা মেয়েকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানোর অভিযোগে তার বাবাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনা দু’টি ঘটেছিল গত ৮ এবং ১২ জুলাই।

জেলা চাইল্ডলাইন সূত্রে খবর, একটি ঘটনায় প্রিভেনশন অফ চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট ২০০৬ আইনে পুলিশ নিজেই মামলা রুজু করে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পাত্রের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর ছেলে এবং সংশ্লিষ্ট নাবালিকার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য ধৃতেরা জামিন পেয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট দুই নাবালিকাকে উদ্ধার করে এখন একটি হোমে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা চাইল্ডলাইন কো-অর্ডিনেটর (বারুইপুর মহকুমা) অভিজিৎ বসু।

ওই দুই ঘটনাকে ব্যতিক্রমী বলে মনে করছে পুলিশ এবং চাইল্ডলাইন কর্তৃপক্ষ। সাধারণত, কোনও নাবালিকার বিয়ের চেষ্টা রোখার পরে তার এবং পাত্রের পরিবারের থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়। যদিও জেলা চাইল্ডলাইন সূত্রে খবর, এমন ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে মুচলেকা দেওয়ার পরেও ফের নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তার পরিবার। অনেক ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে। অনেকের ধারণা, এক বার বিয়ে হয়ে গেলে বিশেষ কিছু করার থাকে না প্রশাসনের। এই প্রবণতা রুখতে প্রশাসন বার্তা দিতে চায়, নাবালিকাকে বিয়ে করলে গ্রেফতারির মতো পদক্ষেপও করা হবে।

অভিজিৎ বলেন, ‘‘নাবালিকা বিয়ের দু’টি ঘটনায় জয়নগর থানা তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এই ধরনের কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হলে নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা কমবে বলে আমাদের ধারণা।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মুচলেকা দেওয়ার পরেও নাবালিকার বিয়ে দিয়ে দিয়েছে তার পরিবার। অভিজ্ঞতা বলছে, মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হলে অনেক ক্ষেত্রে পাত্রী ও পাত্রপক্ষ আরও গোপনীয়তার সঙ্গে বিয়ের পর্ব চুকিয়ে ফেলে। গ্রেফতারির মতো পদক্ষেপ করা হলে এই প্রবণতা রোখা যেতে পারে।’’

জয়নগরে যে দুই নাবালিকার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাদের বয়স যথাক্রমে ১৩ এবং ১৬। অভিজিৎ বলেন, ‘‘একটি ক্ষেত্রে বিয়ের রাতেই পাত্র ও পাত্রীকে লোকচক্ষুর আড়ালে সরিয়ে দিয়েছিল দুই পক্ষ। মধ্য রাতে খবর পাওয়ায় সেখানে যেতে প্রশাসনের কিছুটা সময় লেগেছিল। মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে সেখানে কাউকে দেখা যায়নি। পরে এক ব্যক্তির সন্ধান পেয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পরে উদ্ধার করা হয় ওই বালিকা বধূকে। গ্রেফতার করা হয় তার স্বামীকে।’’ দ্বিতীয় ক্ষেত্রে পাত্রের বাবা-ই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন তাঁর ছেলে এক নাবালিকাকে বিয়ে করেছে। এর পরেই পুলিশ তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করে। ধৃত তিন জনের বাড়িই জয়নগরে।

অন্য বিষয়গুলি:

Teenage Marriage Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy