প্রতীকী চিত্র।
তরুণীর ফোন পেয়েই প্রেমের অভিনয় শুরু করে ব্যক্তি। বনগাঁ থেকে গুজরাত রোজই চলত কথাবার্তা। এরপর বনগাঁর ওই তরুণী দেখা করতে চান। স্থান ঠিক হয় ক্যানিং। কিন্তু ক্যানিঙে এলেই যে পুলিশের জালে ধরা পড়বে নারী পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা। তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি সে।
দিন কয়েক আগে এ ভাবেই প্রেমের জালে ফেলে নারী পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা সাগর লস্করকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় কাজলি দাস নামে এক মহিলাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, বনগাঁর এক কলেজ পড়ুয়া তরুণীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া তরুণীই আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন। তরুণীই পুলিশকে ওই চক্রের সম্পর্কে সব জানান।
ওই তরুণী জানান, প্রেমের টোপ দিয়ে সাগর অনেক তরুণীকেই এ ভাবে নিয়ে যেত। এরপর তাঁদের নামানো হতো দেহব্যবসায়। শুধু তাই নয়, প্লেনের টিকিট কেটেও তরুণীদের পাঠানো হতো দেহব্যবসার কাজে। বনগাঁর কাজলি এই কাজে সাগরকে সাহায্য করত। কাজলি মেয়েদের সঙ্গে ফোনে সাগরের পরিচয় করাত। সাগর প্রেমের অভিনয় করে, বিয়ে করে মেয়েদের গুজরাত নিয়ে যেত। এরপরেই তাদের দেহব্যবসার কাজে নামানো হতো বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এই কাজে রাজি না হলে চলত মারধর।
কে সাগর?
সাগরের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী এলাকায়। বছর দশেক আগে সে গুজরাতের নারদা থানা এলাকায় যায়। এলাকা থেকে মেয়েদের বেশি বেতনের কাজের লোভ দেখিয়ে নিয়ে যেত সে বলে অভিযোগ। প্রথম থেকেই সে নারী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কী ভাবে বনগাঁর তরুণী সাগরের কাছে পৌঁছলো?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফোনে ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় মুর্শিদাবাদের এক যুবকের। ওই যুবকের সঙ্গে তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। কাজলি ওই তরুণীর পরিচিত। কাজলি ওই তরুণীকে বলে, ‘‘গুজরাতে তার এক পরিচিত আছে। যে ওই যুবককে কাজ খুঁজে দিতে পারবে।’’
তার কথা মতো ওই তরুণী ও যুবক গুজরাতে সাগরের কাছে যান। অভিযোগ, এরপরে সাগর ওই তরুণীকে আটকে রেখে যুবককে মারধর করে ভয় দেখিয়ে গুজরাত থেকে তাড়িয়ে দেয়।
আরও খবর
এ বার বনের গভীরে যাওয়ার সুযোগ মিলবে
ওই যুবক বাড়ি ফিরেই সমস্ত ঘটনা ওই তরুণীর বাড়িতে জানান। এর পরেই পুলিশে অভিযোগ করেন তরুণীর বাবা। বনগাঁ থানার পুলিশ গুজরাত যায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করতে।
পুলিশ জানিয়েছে, গুজরাতে সাগরের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে কিছু নথিপত্র মিলেছিল। এরপরেই পুলিশের ঠিক করে দেওয়া এক তরুণী সাগরের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করেন। ক্যানিভে এলে পুলিশ সাগরকে গ্রেফতার করে। তখনই উদ্ধার করা হয় বনগাঁর ওই তরুণীকে।
জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃতরা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাদের জেরা করে আরও কারা ওই চক্রে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy