Advertisement
E-Paper

আরপিএফের তৎপরতায় বাড়ি ফিরল স্কুলপড়ুয়া কিশোরী

প্রতিদিনের মতো সে দিনও নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলের পোশাকে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বছর পনেরোর কিশোরী। কিন্তু স্কুলে গেলেও নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি ফেরেনি সে। উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা সাহায্য চেয়ে দ্বারস্থ হন রেল পুলিশের।

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৩
Share
Save

ভোর সাড়ে চারটে। পায়ে পায়ে ট্রেনের টিকিট বুকিং কাউন্টারের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল স্কুলপড়ুয়া মেয়েটি। দিল্লিগামী ট্রেনে অসংরক্ষিত কামরায় টিকিট কাটতে চেয়েছিল সে। অথচ, সঙ্গে যথেষ্ট টাকা নেই। স্কুলের পোশাক পরা ছাত্রীটিকে অত ভোরে টিকিট কাউন্টারের সামনে দেখে খটকাই লেগেছিল বুকিং ক্লার্কের। গোলমালের আশঙ্কা করেন তিনি। ছাত্রীটিকে কিছু বুঝতে না দিয়ে তাই তিনি আরপিএফ কর্মীদের নজরে আনেন বিষয়টি। এর কিছু পরেই আরপিএফ কর্মীরা মেয়েটির সঙ্গে সোনারপুরের নিখোঁজ থাকা এক স্কুলপড়ুয়ার ছবি মিলিয়ে দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন, এ সে-ই। এ ভাবেই সম্প্রতি আরপিএফের তৎপরতায় ওই কিশোরীকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে রেল পুলিশ।

প্রতিদিনের মতো সে দিনও নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলের পোশাকে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বছর পনেরোর কিশোরী। কিন্তু স্কুলে গেলেও নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি ফেরেনি সে। উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা সাহায্য চেয়ে দ্বারস্থ হন রেল পুলিশের। স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সমস্যার কথা রেলরক্ষী বাহিনীর আধিকারিকদের জানান। এর পরেই তাঁরা সোনারপুর স্টেশনের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করেন। তাতেই ওই পড়ুয়াকে স্কুল পোশাকে স্টেশন চত্বরে ঢুকতে দেখা যায়। ফলে ভিড়ে মিশে গেলেও সে যে স্টেশনে এসেছিল, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয় রেল পুলিশ। জানা যায়, মায়ের সঙ্গে পড়াশোনা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরেই সম্ভবত বাড়ি ছেড়েছিল ওই কিশোরী।

এর পরে রেলরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে দ্রুত ওই পড়ুয়ার ছবি এবং বিস্তারিত বিবরণ সম্ভাব্য সব স্টেশন এবং আরপিএফ আউটপোস্টে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই পড়ুয়া সোনারপুর থেকে ট্রেনে শিয়ালদহ গিয়ে সেখান থেকে বালি পৌঁছেছিল। এর পরে সেখানকার বুকিং কাউন্টার থেকে দিল্লি যাওয়ার টিকিট কাটতে যায় যখন, তখনই নজরে আসে আরপিএফের। সোনারপুরের নিখোঁজ পড়ুয়ার ছবি দেখে নিশ্চিত হওয়ার পরে বিধি মেনে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে রেল পুলিশ।

রেল সূত্রের খবর, বিভিন্ন স্টেশন থেকে শিশু, কিশোর-কিশোরীদের হারিয়ে যাওয়া ঠেকাতে রেলের কর্তারা বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মীদের এ নিয়ে সচেতন করার পাশাপাশি বিশেষ দলও তৈরি করা হয়েছে। রেলের পক্ষ থেকে ‘অপারেশন নানহে ফরিস্তে’-র মাধ্যমে প্রতিদিন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে নাগাড়ে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি রেলরক্ষী বাহিনী নিজস্ব গোয়েন্দা বাহিনীও তৈরি করেছে। যাদের কাজ হল, বিভিন্ন স্টেশনের সঙ্গে নিয়মিত তথ্য আদানপ্রদান করা।

জানা গিয়েছে, ওই ব্যবস্থায় গত জানুয়ারি থেকে অগস্ট মাসের মধ্যে ৬৫৮ জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। চলতি মাসেই উদ্ধার হয়েছে ৯৫ জন। এর মধ্যে সাত জনকে উদ্ধার করা হয়েছে পাচারকারীদের হাত থেকে। এই কাজের জন্য সর্বত্র রাজ্য প্রশাসন এবং চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় রেখে কাজ করা হয় বলেও জানাচ্ছেন রেলের আধিকারিকেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

RPF Child Safety rescue

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}