হেলে থাকা বাতিস্তম্ভের পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র।
১ কোটি টাকা খরচ করে প্রায় সাতশো বাতিস্তম্ভ বসানো হয়েছিল বসিরহাট শহরে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তার অধিকাংশই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কোনওটি ভেঙে পড়েছে, কোনওটি আবার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন বিরোধী দলনেতারা। অভিযোগ, নীল-সাদা বাতিস্তম্ভ মাথায় ভেঙে পড়ে আহত হয়েছেন পথচলতি মানুষ। কখনও গাড়ির উপরে ভেঙে পড়েছে বাতি।
পুর প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের শেষের দিকে বসিরহাটের হরিশপুর থেকে ধলতিথা এবং থানার মোড় থেকে ট্যাঁটরা বাজার পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে এলইডি আলো লাগিয়ে বসিরহাট শহর সাজানোর পরিকল্পনা করেন বসিরহাট দক্ষিণের তৎকালীন বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস। এখন সেই আলোর বেশিরভাগই বিকল হয়েছে। হরিশপুরের দিকের বাতিস্তম্ভ প্রায় সব ক’টিই ভেঙে পড়েছে।
এলাকার বাসিন্দা তপন দাস বলেন, “সম্প্রতি রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে একটি বাতিস্তম্ভ ভেঙে আমার সাইকেলের উপরে পড়ে। অল্পের জন্য বিপদের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম।” ত্রিমোহনী এলাকার রুকসানা বিবির কথায়, “ক’দিন আগে একটি আলোর স্তম্ভ মেয়ের গায়ের উপরে এসে পড়ছিল। ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিই, তাই চোট পায়নি।”
কংগ্রেস নেতা হিরন্ময় দাস বলেন, “বসিরহাট শহরের রাস্তায় বাতিস্তম্ভ লাগানো নিয়ে দুর্নীতি করা হয়েছে। বাতিস্তম্ভগুলি ঠিক না করা হলে অন্তত যেন ভেঙে ফেলা হয়।’’
বিজেপি নেতা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “ফাঁপা লোহার পাইপের মাথায় এলইডি আলো ও পাইপের গায়ে নীল-সাদা টুনি লাগিয়ে কি শহরবাসীর উন্নতি করা যায়? আসলে আলো নিয়ে লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতি করায় নির্বাচনের মুখে মানুষকে জবাবদিহি করতে গিয়ে তৃণমূল মুশকিলে পড়েছে। কাটমানি নিয়ে মাথার উপরে লাগানো আলো এখন মাথার উপরেই ভেঙে পড়ছে।”
সিপিএম নেতা রাজা বিশ্বাসের কথায়, “অতি নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে করা বাতিস্তম্ভগুলি মুখ থুবড়ে পড়ছে।”
এ বিষয়ে দীপেন্দুর বক্তব্য, “শহরবাসীর সুবিধার জন্য ১ কোটি টাকা খরচ করে সাতশো এলইডি বাতিস্তম্ভ বসানো হয়েছিল। কোনও দুর্নীতি হয়নি। তবে কোনও এক অজানা কারণে আলো লাগানোর জন্য পুরসভার তৎকালীন ঠিকাদারের সব টাকা পরিশোধ করা হয়নি বলে শুনেছিলাম।”
প্রাক্তন পুরপ্রধান তপন সরকারের কথায়, “প্রাক্তন বিধায়ক আলো লাগিয়েছেন। আলো নিয়ে কোনও দুর্নীতি কিছু হয়ে থাকলে তা তিনিই জানেন। তবে ৪ মাস আগে যখন আমি পুরপ্রধান ছিলাম, তখন সব আলো ও স্তম্ভ ঠিক করা হয়েছিল।”
ওই বাতিস্তম্ভের বিষয়ে বসিরহাট দক্ষিণের বর্তমান বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঠিক কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বর্তমান পুর প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা অসিত মজুমদারের দাবি, “আমি মাত্র চার মাস হল দায়িত্ব পেয়েছি। বাতিস্তম্ভের বিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে সাংসদের দেওয়া হাইমাস্ট লাইট মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy