প্রতীকী ছবি।
ক্রেন লাগলে অমুক নম্বরে ফোন করুন। অ্যাম্বুল্যান্স লাগলে তমুক নম্বরে।
ফোন নম্বরের এই তালিকাই ভরসা বিপর্যয় মোকাবিলায়। প্রয়োজনে একটা ফোন, পৌঁছে যাবে সব জিনিস— আশ্বাস দেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কর্তারা। নিজস্ব পরিকাঠামো বলতে তেমন কিছুই গড়ে তোলা হয়নি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে। বেসরকারি সংস্থা যদি কোনও ভাবে শেষ মুহূর্তে পরিষেবা না দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়? ‘‘কোনও অসুবিধা নেই, আমাদের কাছে তো একটা জিনিসের ক্ষেত্রে একটা নম্বর নেই, নম্বরের তালিকা আছে রীতিমতো’’— আশ্বস্ত করেন প্রশাসনের এক কর্তা।
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য ২৯টি ব্লকের সব ক’টিতে একটি করে তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে কোন ধরনের বিপর্যয়ে কোন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, তার নাম, ফোন নম্বর দেওয়া থাকছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, নৌকাডুবি, পথ দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়— নানা ধরনের জরুরি অবস্থা আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত সরকারি পরিকাঠামো নেই ঠিকই, কিন্তু নানা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে প্রশাসনের চুক্তি আছে। ক্রেন চাইলে আধ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাবে ক্রেন। অন্য কিছু চাইলে, তা-ও নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে দেবে সেই সংস্থা।
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর বলেন, ‘‘কলকাতা-সহ সব এলাকায় বিপর্যয় পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি যৌথ ভাবেই করার পরিকল্পনা করা যাবে। কোনও বিপর্যয় ঘটার আধঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ব্যবস্থা করা রয়েছে। কোনও অসুবিধা হওয়ার প্রশ্নই নেই।’’
সুন্দরবন-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার অধিকাংশ এলাকায় নদী-ঘেরা। তা ছাড়া রয়েছে বঙ্গোপসাগর-লাগোয়া কাকদ্বীপ এবং ক্যানিং মহকুমা। আয়লার সময়ে প্রকৃতির তাণ্ডবের সাক্ষী এই জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপ মহকুমায় জেলা প্রশাসনের তরফে দু’টি স্পিডবোট প্রায় অধিকাংশ সময়ে টহলদারি করে। বিভিন্ন ব্লক অফিসারদের কাছে ওই সব স্পিডবোটের ফোন নম্বর রয়েছে। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তারা প্রাথমিক ভাবে সামাল দিতে পারবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘বর্ষার মরসুমে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত পাঁচমাস কাকদ্বীপ মহকুমায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪০ জনের একটি দল দু’টি স্পিডবোট, লাইফ জ্যাকেট-সহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে তৈরি থাকে।’’
ক্যানিং মহকুমা এলাকায় বিপর্যয় মোকাবিলায় একটি দল মোতায়েন থাকলেও, সেই বিভাগকে প্রায় ঠুঁটো জগন্নাথ বলেই দাবি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ‘নাইটভিশন সার্চলাইট’, ‘ইমারজেন্সি সার্চলাইট’, প্রশিক্ষিত ডুবরি এবং অক্সিজেন মাক্স— কিছুরই ব্যবস্থা নেই ওই বিভাগে।
অভিযোগ শুনে দমতে রাজি নয় জেলা প্রশাসন। এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রতিটি ব্লকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়েছে। অন্তত ৪০ জন যুবককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরে ওই দলটি তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ওই দলই বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে কাজ শুরু করতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy