জলমগ্ন মধ্যমগ্রামের পাটুলি-শিবতলা এলাকা। সোমবার এই জল থেকেই উদ্ধার হয় কালী মণ্ডলের (ইনসেটে) মৃতদেহ। ছবি: সুদীপ ঘোষ
নদী বা পুকুর নয়, পাড়ার মধ্যেই জমে ছিল বৃষ্টির জল। কোথাও বুক তো কোথাও গলা সমান। সোমবার সেখানেই পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। কিছু ক্ষণ পরে ওই জলেই ভেসে ওঠে তাঁর দেহ। কলকাতার উপকণ্ঠে মধ্যমগ্রাম পুরসভা এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম কালী মণ্ডল (৬৫)। তাঁর পায়ে সমস্যা ছিল। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে মধ্যমগ্রাম পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের পাটুলি-শিবতলা এলাকায়।
মৃতার নাতি কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ তাঁর দিদিমা জল আনতে গিয়েছিলেন। বহু ক্ষণ পরেও তিনি বাড়ি না-ফেরায় খোঁজখবর শুরু করেন তাঁরা। দুপুরের দিকে জলে ভেসে ওঠে বৃদ্ধার দেহ। কৃষ্ণ বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, দিদিমা পা পিছলে পড়ে যান। বুক সমান জল ছিল আমাদের বাড়ির সামনে। বয়স্ক মানুষ, পড়ে গিয়ে আর উঠতে পারেননি। বাড়ির সামনেই ওই ঘটনা ঘটে।’’ ময়না-তদন্তের পরে মঙ্গলবার রাতে কালীদেবীর দেহ দাহ করা হয়। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে আমাদের ধারণা, জলে ডুবেই ওঁর
মৃত্যু হয়েছে।’’
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ওই এলাকাটি নিচু, তাই প্রতি বছরই ভারী বৃষ্টিতে জলে ডুবে যায়। তখন প্রতিটি বাড়ি কার্যত এক-একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়। এ বারেও সেই অবস্থা। বর্ষা শুরু হতেই এলাকা জলবন্দি। লোকজন নৌকায় চেপে যাতায়াত করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সমস্যা বাম আমলে যেমন ছিল, আজও তেমনই আছে। নিচু এলাকায় উন্নয়ন করতে গিয়ে রাস্তা উঁচু করা হয়েছে, যার জেরে বসত এলাকা পরিণত হয়েছে পুকুরে। বৃষ্টি হলেই অন্যান্য জায়গার জল শিবতলায় এসে জমা হয়। গত বছরই মাসির বাড়ি বেড়াতে এসে একটি শিশু জলে পড়ে যায়। তাকে কোনও মতে বাঁচানো সম্ভব হয়েছিল।
এ বিষয়ে কথা বলতে তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহম্মদ জুম্মান আলিকে একাধিক বার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি। মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রশাসক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষ এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তিন নম্বর ওয়ার্ডের এই সমস্যার সমাধান আমরাও করতে চাই। ওই এলাকার পাশেই বাণীকণ্ঠ খাল। খাল সংস্কারের বিষয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওখানে একটি পাম্পিং স্টেশন তৈরি করতে চাই। কিন্তু খাল সংস্কার না হলে তা করেও সুবিধা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy